সরকারি উদ্যোগে ধান কেনা চলছে বকুলতলায়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
করোনা-আবহে মাস দুই বন্ধ থাকার পর হুগলিতে ফের সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হল। দিন সাতেক হল জেলার ১৮টি ব্লক এলাকার মোট ২৫ টি সরকারি ধান ক্রয় (সিপিসি) কেন্দ্র থেকে ধান কেনা চলছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত ওই শিবির থেকে প্রায় ৭ হাজার টন ধান কেনা হয়েছে বলে জেলা খাদ্য সরবরাহ দফতরের হিসাব।
এই লকডাউন পরিস্থিতিতে চাষিদের কাছে ধান কেনা এবং দাম মেটানোর ক্ষেত্রে এ বার পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতদিন সরকারি নির্দেশিকা ছিল, এক জন চাষি সর্বোচ্চ ৪৫ কুইন্টাল ধান বিক্রি করতে পারবেন। এ দফায় সেই পরিমাণ ৯০ কুইন্টাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে।
একইভাবে ধানের দাম মেটানোর ক্ষেত্রে আগে হাতে হাতে চেক দেওয়া হত। লকডাউনে টাকা সরাসরি চাষির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকবে তিন দিনের মধ্যে। সরকারি কেন্দ্রগুলিতে (সিপিসি) ধান বিক্রির ক্ষেত্রে দাম ধার্য হয়েছে ১৮৩৫ টাকা প্রতি কুইন্টাল। সমবায় সমিতিগুলি বিক্রি করলে কুইন্টালে ১৮১৫ টাকা।
জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত নভেম্বর মাস থেকেই শিবির করে আমন ধান কেনা শুরু হয়েছে। মাঝে করোনা প্রকোপে সমস্ত ধান কেনার শিবির বন্ধ রাখা হয়। সদ্য বোরো ধান উঠতে শুরু করেছে। এই অবস্থায় চাষির হাতে টাকা নেই। আবার ধান বিক্রি করার বাজার এবং পরিবহণ ব্যবস্থাও নেই। তাই সরকারি স্তরে ধান কেনায় জোর দেওয়া হয়েছে। গোঘাটের ভিকদাসের শেখ তাহিরুদ্দিন নামে এক চাষি বলেন, “বাজারে এখন বোরো ধানের দাম কুইন্টাল
প্রতি ১৬১০ টাকা ১৬২০ টাকা করে যাচ্ছে। বাড়ি থেকে বয়ে নিয়ে যাবে। সেখানে সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে মিলছে ১৮৩৫ টাকা। যাতায়াত খরচ আর খারাপ ধান অজুহাতে কিলো পাঁচেক বাদ দিলেও বাজারের থেকে গড়ে কুইন্টাল প্রতি ১০০ টাকার বেশি থাকছে। ধান কেনার সরকারি শিবিরগুলো হাতের কাছে থাকলে আরও লাভটা পাওয়া যেত।’’
জেলা খাদ্য নিয়ামক অসীমকুমার নন্দী বলেন, “বোরো ধান এখনও মাঠ থেকে পুরো ওঠেনি। তবে আমরা জেলার ২৫টা সিপিসি-ই খুলে দিয়েছি। চাষিরা ধান বিক্রিও শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে ৭ হাজার টন কেনা হয়েছে। আগে যাঁরা আমন ধান বিক্রি করতে পারেননি, সেই ধানও নেওয়া হচ্ছে।’’ তিনি বলেন, “আমাদের ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টন। সেটা বাড়িয়ে ৪ লক্ষ ১০ হাজার টন করা হয়েছে। আগের দফায় ২ লক্ষ ৪৫ হাজার টন ধান কেনা হয়ে গিয়েছিল। বাকি ১ লক্ষ ৬৫ টন এখন কেনা হবে।’’