Dams

বাঁধ মেরামতি কবে শুরু, উত্তর অমিল

বর্ষা আসছে। অন্যান্য বার এই সময়ে দুই জেলার বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিতে বাঁধ মেরামতির কাজ পুরোদমে শুরু হয়ে যায়। এ বার লকডাউনে পরিস্থিতি ভিন্ন। সময়ের মধ্যে সেই কাজ শেষ হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অবস্থার খোঁজ নিল আনন্দবাজার। আজ হাওড়া জেলা। কেন শুরু হচ্ছে না কাজ?

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২০ ০২:২৫
Share:

উলুবেড়িয়া নদীবাঁধে ভাঙন। ছবি: সুব্রত জানা

লকডাউনে সেচ দফতরের কাজে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় হাওড়া জেলায় বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হল কই?

Advertisement

কবে থেকে ওই কাজ শুরু হবে, এ প্রশ্নেরও উত্তর মিলছে না। কাজ দ্রুত শুরু না হলে আগামী বর্ষায় জেলার দু’টি ব্লকে (উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা-২) বন্যার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন জেলা সেচ দফতরের কর্তাদেরই একাংশ।

কেন শুরু হচ্ছে না কাজ?

Advertisement

গত মঙ্গলবার থেকে ওই কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ এবং ওই কাজে যুক্ত ঠিকাদাররা মনে করছেন, সরকারি নির্দেশিকা মেনে কাজ করা কঠিন। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে— ন্যূনতম শ্রমিক নিয়ে কাজ করতে পারা যাবে। শ্রমিকদের হতে হবে স্থানীয়। তাঁদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। কাজের সময়ে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং জীবাণুনাশকের ব্যবস্থা করতে হবে।

ঠিকা সংস্থাগুলির দাবি, নির্দেশমতো শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, শ্রমিকদের মাস্ক পরা বা জীবাণুনাশকের ব্যবস্থা করা সম্ভব। কিন্তু স্থানীয় শ্রমিকদের উপরে নির্ভর করে এই কাজ করা যাবে না। কারণ, বাঁধ এবং পাড় মেরামতিতে দক্ষ শ্রমিক লাগে। তাঁরা আসেন মূলত বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে। তাঁদের আসার অনুমতি দিতে হবে। কাজটি শ্রমনির্ভর হওয়ায় ন্যূনতম শ্রমিক নিয়ে এই কাজ করা যাবে না। ফলে, শ্রমিকের সংখ্যা বাড়াতে হবে। বোল্ডার, শালবল্লা, বালি এবং পাথর আনার জন্য ট্রাক চলাচলের অনুমতি দিতে হবে।

গত মঙ্গলবার এই সব বিষয় নিয়ে সেচ দফতরের দু’টি বিভাগের (নিম্ন দামোদর নির্মাণভুক্তি এবং উলুবেড়িয়ার সিজবেড়িয়া সাব-ডিভিশন) ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা করে ঠিকা সংস্থাগুলি। নিম্ন দামোদর নির্মাণভুক্তির এক কর্তা জানান, সমস্যাগুলির কথা জানিয়ে তাঁরা দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পরামর্শ চেয়েছেন। সেই পরামর্শ মিললে কাজ শুরুর রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। সমস্যা মিটে গিয়ে দ্রুত কাজ শুরু হবে বলেও মনে করেন তিনি।

বন্যা মোকাবিলার জন্য সাধারণত ডিসেম্বর মাসে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়। জুন মাসে বর্ষা পড়ার আগে শেষ হয়। গত বছর দামোদরের বাঁধ ভেঙে উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা-২ ব্লকে বন্যা হয়। এ বছরও সূচি মেনেই উলুবেড়িয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে গঙ্গার বাঁধ ও পাড় মেরামতির কাজ শুরু হয়। একই কাজ চলছিল জয়পুরের দক্ষিণ ভাটোরা এবং শ্যামপুরের শসাটিতে রূপনারায়ণ নদের পাড়ে। উদয়নারায়ণপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় দামোদরের বাঁধ মেরামতিও চলছিল। কিন্তু করোনা আবহের জেরে মার্চের মাঝামাঝি থেকেই কাজে ভাটা পড়তে থাকে। লকডাউন শুরু হওয়ার পরে সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

প্রায় দেড় মাস কাজ বন্ধ থাকার ফলে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ হবে কিনা, এটাই এখন বড় প্রশ্ন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement