Gondolpara

বন্ধ পিকনিক, হকাররা আজ গোন্দলপাড়ায়

ওঁরা— চন্দননগরের সিটু পরিচালিত ‘পথিপার্শ্বস্থ হকার সংগঠন’-এর সদস্য। কেউ রাস্তার ধারে জামাকাপড় বিক্রি করেন, কেউ ঘড়ি সারান, কেউ বা ফলমূল বিক্রি করেন।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চন্দননগর শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২০ ০১:০১
Share:

ফাইল চিত্র।

এ বার পিকনিক নয়। বন্ধ গোন্দলপাড়া জুটমিলের শ্রমিকদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছেন ওঁরা।

Advertisement

ওঁরা— চন্দননগরের সিটু পরিচালিত ‘পথিপার্শ্বস্থ হকার সংগঠন’-এর সদস্য। কেউ রাস্তার ধারে জামাকাপড় বিক্রি করেন, কেউ ঘড়ি সারান, কেউ বা ফলমূল বিক্রি করেন। সংখ্যায় অন্তত ২৫০ জন। বেশ কয়েক বছর ধরে প্রতি ২৩ জানুয়ারি, নেতাজির জন্মদিনে ওঁরা চাঁদা তুলে সপরিবারে পিকনিক করে আসছিলেন। আজও চাঁদা তুলবেন। তবে পিকনিকের জন্য নয়। নিজেদের অভাবকে দূরে রেখে বন্ধ ওই জুটমিলের শ্রমিকদের হাতে চাল-আলু তুলে দেওয়ার জন্য।

প্রায় দেড় বছর ধরে ওই জুটমিল বন্ধ। শ্রমিক রয়েছেন প্রায় ৫০০০ জন। ইতিমধ্যে চিকিৎসার অভাবে অন্তত ২০ জন মারা গিয়েছেন। অভাবের তাড়নায় পাঁচ জন আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ। কেউ কেউ দিনমজুরি বা রাজমিস্ত্রির কাজ করে কোনও মতে দিন গুজরান করছেন। কবে মিল খুলবে বা আদৌ খুলবে কিনা, জানেন না তাঁরা।

Advertisement

এর আগে ‘চন্দননগর অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি’ এবং ‘সবুজের অভিযান’ সংগঠনের তরফে বেশ কয়েকবার গোন্দলপাড়ার শ্রমিকদের জন্য চাল-ওষুধ এবং ওই সব পরিবারের শিশুদের জন্য শিক্ষা সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে। ফের এ বার সিটুর হকারদের কাছ থেকে সাহায্য আসার কথা জানতে পেরে কিছুটা আশ্বস্ত ওই জুটমিলের শ্রমিকেরা। তাঁদের মধ্যে রাজেশ জয়সোয়ারা বলেন, ‘‘সাহায্য পেলে অবশ্যই ভাল লাগে। কিছুদিনের জন্য তো অভাবের হাত থেকে বাঁচি। শ্রমিক মহল্লার যে সব বাচ্চা পড়াশোনা করছে, তাদের অনেকের শিক্ষা সরঞ্জামও প্রয়োজন।’’

ওই হকার সংগঠনের নেতা আব্দুল রশিদের শহরের রাস্তার পাশে একফালি জামাকাপড়ের দোকান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘শীতে বনভোজন বাঙালিদের বরাবরের প্রথা। এ বার নেতাজির জন্মদিন একটু অন্য ভাবে পালন করব। আমাদের কারও রোজগার তেমন নয়। গোন্দলপাড়ার শ্রমিকদের দুর্দশার কথা ভেবে পিকনিকটা এ বার না হল বাদ দিলাম। পিকনিকের চাঁদা তুলে শ্রমিক পরিবারগুলোর হাতে চাল-আলু তুলে দেব বলে ঠিক করেছি।’’ ওই সংগঠনের কর্মী আশিস দে বলেন, ‘‘বন্ধ জুটমিলের শ্রমিকদের জন্য সামান্য চেষ্টা করছি। ওদের পাশে দাঁড়াতে পারছি, ভেবে ভাল লাগছে।’’

এই উদ্যোগে স্বাগত জানিয়েছেন চন্দননগর অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতির কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা নানা ভাবে চেষ্টা করছি। নাগরিক সমাজের কাছেও আবেদন রেখেছি। হকার সংগঠনে থাকা প্রান্তিক মানুষেরা যে ভাবে গোন্দলপাড়া শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, তা অনুকরণীয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement