নয়া সিদ্ধান্ত পূর্ত ও নগরোন্নয়ন দফতরের

গাছ কাটার বদলে স্থানান্তরের নির্দেশ

সম্প্রতি পূর্ত ও নগন্নোয়ন দফতরের কাছে চন্দননগরের পরিবেশ অ্যাকাডেমি একটি আবেদনে জানায়, শুধু বিদেশে নয়, আমাদের দেশেও গাছ না কেটে স্থানান্তরের প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হচ্ছে বিভিন্ন প্রকল্পে।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৯ ০১:৫২
Share:

রঙিন: আরামবাগের রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র

আর গাছ কাটা নয়। বন দফতরকে এ বার শুধু গাছ স্থানান্তরেরই নির্দেশ দিল রাজ্যের পূর্ত ও নগন্নোয়ন দফতর।

Advertisement

সম্প্রতি পূর্ত ও নগন্নোয়ন দফতরের কাছে চন্দননগরের পরিবেশ অ্যাকাডেমি একটি আবেদনে জানায়, শুধু বিদেশে নয়, আমাদের দেশেও গাছ না কেটে স্থানান্তরের প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হচ্ছে বিভিন্ন প্রকল্পে। কলকাতার রাজারহাটেও কিছু গাছকে একই প্রযুক্তিতে কাজ হচ্ছে। এই প্রযুক্তি যখন এসেই গিয়েছে, তখন রাজ্যে কেন বিভিন্ন প্রকল্পে গাছ কাটা চলবে? নতুন এই প্রযুক্তিকে জনপ্রিয় করতে সরকার এগিয়ে আসবে না কেন? সংবাদমাধ্যমে সম্প্রতি প্রকাশিত এই সংক্রান্ত একটি লেখাও ওই আবেদনের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়।

পরিবেশ অ্যাকাডেমির ওই চিঠি পাওয়ার পরই নড়ে বসে রাজ্যের পূর্ত ও নগন্নোয়ন দফতর। দফতরের তরফে সরাসরি বন দফতরকে চিঠি লিখে জানিয়ে দেওয়া হয় বিষয়টি। জানানো হয়স এক্ষেত্রে যাঁরা প্রকল্প তৈরি করবেন, তাঁরাই গাছ সরানোর ক্ষেত্রে সমস্ত ব্যয়ভার বহন করবেন।

Advertisement

গত কয়েক বছরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে গাছ কাটা হচ্ছে লাগামহীনভাবে। সারা ভারতের মধ্যে যে সব রাজ্য দূষণপ্রবণ বলে চিহ্নিত, তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের স্থান উপরের দিকে। শুধু কলকাতা নয়, এখন শহরতলিতেও আবাসনের দোহাই দিয়ে নির্বিচারে কেটে ফেলে হচ্ছে গাছ। পুরসভাগুলি পরিবেশরক্ষার প্রশ্নে সচেতন নয় একেবারে। সম্প্রতি হুগলিতে দিল্লি রোড সম্প্রসারণের সময় প্রচুর গাছ কাটা হয়েছে। রাজ্য সড়ক অহল্যাবাই রোড সংস্কারের সময়ও গাছ কাটা হয়েছে নির্বিচারে। বন দফতরের বিধি অনুয়ায়ী ১টা গাছ কাটলে ৫টি গাছ লাগাতে হয়। কিন্তু সরকারি প্রকল্পেই সেই বিধি কার্যকর করা হচ্ছে না। আর বেসরকারি ক্ষেত্রে তো সেই নিয়ম মানার ধার দিয়ে যাচ্ছেন না কেউই।

বন দফতরের গাছের বাইরে ব্যক্তিগত বাগান বা বনাঞ্চল রক্ষার প্রশ্নে এই রাজ্যে সে ভাবে কোনও বিধিই ছিল না এক সময়। কিন্তু ১৯৯৬ সালে হুগলির মানকুন্ডুর খাঁয়ের বাগানের মত প্রাচীন আমবাগানে নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছিল। একটি সংস্থা কলকাতা হাইকোর্টে বিষয়টি জানায়। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি ভগবতীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশিকা জারি করেন, শুধু বন দফতরের গাছ নয়, ব্যক্তিগত মালিকানাধীন কোনও বাগান বা গাছও বন দফতরের অনুমতি ছাড়া কাটা যাবে না।

নতুন নিয়মের বিষয়ে পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখন প্রকৃতির যা পরিস্থিতি, সে দিক দিয়ে পূর্ত দফতরের এই নির্দেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাটির নীচের জলের ভাঁড়ার শুকিয়ে আসছে। এই নির্দেশ না মানা হলে আমাদের ভবিষ্যৎই ভয়ঙ্কর।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement