ফের যানজট হাউজিং মোড়ে, দুর্ভোগের মাত্রা বাড়ল
Dunkuni housing diversion

এ বার টানা ১২ ঘণ্টা গাড়ি নড়ল না

স্বাভাবিক ভাবেই এই অচলাবস্থায় প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা। বহু গাড়ির চালক-আরোহীদের ক্ষোভ, যানজট এড়াতে পুলিশ অনেক সময়েই ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলে। কার্যক্ষেত্রে কিছু মালুম হয় না। না-হলে দিনের পর দিন এ ভাবে একটি ব্যস্ত রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা কী ভাবে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে পারে?— প্রশ্ন অনেকের।     

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

ডানকুনি শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৫৮
Share:

রুদ্ধ: এমনই ছিল যানজটের হাল। নিজস্ব চিত্র

দুর্ভোগ কিছুতেই কাটছে না। দিন দিন তা আরও জটিল হচ্ছে।

Advertisement

ডানকুনি হাউজিং মোড়ের যানজটে কয়েক মাস ধরে নাকাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কখনও আধ ঘণ্টা, কখনও চল্লিশ মিনিট লেগে যাচ্ছিল ওই মোড় পেরোতে। কিন্তু সেই দুর্ভোগ এ বার মাত্রাছাড়া!

বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে যে যানজট শুরু হয়, তা কাটতে শুক্রবার বেলা ১১টা পেরিয়ে যায়। অর্থাৎ, কার্যত টানা প্রায় ১২ ঘণ্টা কোনও গাড়ি নড়েনি। আশপাশের অলি-গলি দিয়ে যে ছোট গাড়ি বেরিয়ে যেতে পারবে, সে উপায়ও ছিল না। কারণ, যানজট সেখানেও ছড়ায়। ফলে, ডানকুনি হাউসিং মোড়ে চুপচাপ অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না কোনও গাড়ির চালক-আরোহীর। শুক্রবার সকালে ডানকুনি, টি এন মুখার্জি রোড বা কালীপুর অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের অনেকে নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলেও পৌঁছতে পারেনি।

Advertisement

পুলিশকর্তাদের মতে, হুগলির গ্রামীণ এলাকার শিয়াখালায় এবং সরস্বতী নদীর উপর দু’টি সেতু সংস্কারের কাজ চলছে একসঙ্গে। ফলে, স্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। তার জেরে গাউজিং মোড়ের কাছেই ডানকুনি সেতু এবং কালীপুরের মোড়ে যানজট হচ্ছে প্রতিদিন। তা ছাড়া, চন্দননগর কমিশনারেট এবং হাওড়া কমিশনারেটের প্রচুর ট্রাক চলে আসছে। সকালের দিকে হুগলির দিক থেকে কলকাতা অভিমুখে গাড়ি যাওয়ার বাড়তি চাপ থাকে। কিন্তু কলকাতায় টালা সেতু বন্ধ থাকায় গাড়ির গতি কম থাকছে। তার উপর পণ্যবাহী গাড়ি সকালে কলকাতায় ঢুকতে দেওয়া হয় না। ভি‌ন্ রাজ্যের বহু গাড়ি কলকাতায় ঢুকতে না-পেরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়ছে। ফলে, যানজটের সমস্যা বাড়ছে।

হুগলি গ্রামীণ পুলিশের ডিএসপি (ট্র্যাফিক) অয়ন সাধু অবশ্য বলেন, ‘‘সেতুর সংস্কারকাজ চলায় আমরা হুগলির গ্রামীণ এলাকা থেকে পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ করছি।’’ সমস্যা সমাধানে আজ, শনিবার চন্দননগর এবং হাওড়া কমিশনারেটের আধিকারিকদের চণ্ডীতলায় একটি বৈঠকে বসার কথা।

দুর্ভোগের ছবিটা ঠিক কেমন?

বর্ধমান থেকে ফাঁকা ট্রাক নিয়ে শুক্রবার ভোরে বেরিয়েছিলেন বিরজু রায়। পণ্য আনতে যাওয়ার কথা হাওড়ার আলমপুরে। কিন্তু ডানকুনি হাউজিংয়ে শুক্রবার সকাল সাড়ে ন’টা থেকে টানা এক ঘণ্টা তিনি দাঁড়িয়ে। তিতিবিরক্ত হয়ে বলেন, ‘‘বর্ধমান থেকে মাইলের পর মাইল চলে এলাম। অথচ, ডানকুনি থেকে আর এগোতে পারছি না। এখানে প্রায়ই কাজে আসতে হয়। পরিস্থিতি রোজ খারাপ হচ্ছে।’’

এ দিন একই রকম দুর্ভোগের শরিক ২৬ নম্বর রুটের বাস কন্ডাক্টর আশিস মাঝি এবং ওই বাসের যাত্রীরাও। তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙা থেকে বাসটি আসছিল। যাওয়ার কথা দক্ষিণেশ্বর হয়ে বনহুগলি। কিন্তু ডানকুনি সেতু পার হয়ে কালীপুরের কাছে যানজটে বাসটি দেড় ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে। যানজট তখন চণ্ডীতলার মুখ পর্যন্ত চলে গিয়েছে।

ডানকুনি টোলপ্লাজার আগে কাপাসহাড়িয়া থেকে বালির মাইতিপাড়া পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা অবরুদ্ধ ছিল এ দিন সকালে। একই ভাবে ডানকুনির দিল্লি রোডের মুখ থেকে অহল্যাবাই রোডের কালীপুর, ডানকুনি সেতু হয়ে চণ্ডীতলার মুখ পর্যন্ত তীব্র যানজট ছিল। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের অ্যাপ্রোচ রোডগুলিতেও যানজট ছড়িয়ে পড়ে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement