বেহাল: এমনই দশা হওড়ার পার্কগুলির। মঙ্গলবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
শহরের বেহাল পার্কগুলির হাল ফেরাতে এ বার বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার হাতে দায়িত্ব তুলে দিল হাওড়া পুরসভা। এ জন্য বছরে ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা ধার্য করা হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা।
তৃণমূল পুরবোর্ডের আমলে হাওড়া শহরে একাধিক পার্ক তৈরি হয়েছিল। খেলাধুলো এবং প্রাতর্ভ্রমণের জন্য খোলামেলা জায়গার কথা চিন্তা করেই বছর চারেক আগে পুরসভার ৬৬টি ওয়ার্ডে প্রায় একশোটি পার্ক তৈরি হয়েছিল। পার্ক তৈরির পরে প্রায় এক বছর রক্ষণাবেক্ষণের কোনও প্রয়োজন হয়নি। অভিযোগ, পরবর্তী সময়ে রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু কোটি কোটি টাকা খরচ করে তৈরি পার্কগুলির রক্ষণাবেক্ষণ কী করে হবে, সে নিয়ে ছিল সংশয়। যে কারণে বেহাল অবস্থা হয়েছিল পার্কগুলির।
মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি পার্ক ঘুরে দেখা গেল, সেই বেহাল ছবিটাই। পার্কের ভিতরে যত্রতত্র পড়ে রয়েছে আবর্জনা, খাবারের অবশিষ্ট। কোথাও ভেঙে গিয়েছে পার্কের সীমানা পাঁচিল এবং সদর। পেভার ব্লক উঠে কাদায় ভরে রয়েছে পার্ক চত্বর। দীর্ঘদিন পার্কগুলি পরিষ্কার না করার অভিযোগের সত্যতা বুঝতে পারা যায় ভিতরে ঢুকলেই। এ সব নিয়ে বারবার পুর প্রশাসনের কাছে অভিযোগ আসছিল। এ বার তাই পার্কগুলির হাল ফেরাতে উদ্যোগী হল হাওড়া পুরসভা।
এ দিন পুর কমিশনার তথা প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন বিজিন কৃষ্ণ বলেন, “বেহাল পার্কগুলির মধ্যে ৭৫টির আকার অনুযায়ী ন’টি অংশে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি অংশের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে আলাদা আলাদা সংস্থাকে। দরপত্র আহ্বান করে সংস্থাগুলিকে নিয়োগ করা হয়েছে। ওই সংস্থাগুলিই রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করবে।”
কী ধরনের কাজ হবে? পুর কমিশনার বলেন, “পার্কগুলি প্রতিদিন সাফাই করা, সার এবং ওষুধ দিয়ে নিয়মিত গাছগুলির পরিচর্যা করা প্রভৃতি কাজ করবে নিযুক্ত সংস্থাগুলি। তবে নতুন করে কোনও পার্কে গাছ লাগানো যাবে না। যা আছে, তাই রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।’’ তাঁর বক্তব্য, এ কাজের জন্য দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন। তেমন কর্মীর অভাব রয়েছে পুরসভায়। সেই কারণে বেসরকারি সংস্থার উপরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে পুরসভার খরচও কমবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এখন থেকে এ কাজে বছরে ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা খরচ করা হবে। প্রতি বছর দরপত্র ডেকে পার্কের রক্ষণাবেক্ষণে সংস্থা নিয়োগ করা হবে বলেও জানিয়েছেন প্রশাসকমন্ডলীর চেয়ারপার্সন।