অভিযোগ পরিবেশপ্রেমীদের

চোলাই-বর্জ্যে বাড়ছে জলদূষণ

পরিবেশকর্মীরা জানান, চোলাই তৈরি করতে প্রচুর জল প্রয়োজন হয়। সেই কারণে নদী, খাল, নয়ানজুলি বা পুকুরের ধারে চোলাই তৈরি করা হয়। চোলাইয়ের উপকরণ, হাঁড়ি-কলসি জলে চুবিয়ে রাখতে হয়। চোলাইয়ের বর্জ্য জল সরাসরি জলাশয়ে ফেলা হয়। তাতেই জলাশয়ের বাস্তুতন্ত্রের দফারফা হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:৪০
Share:

ক্ষতি: পুকুরের জলে ভাসছে চোলাই। নিজস্ব চিত্র

শান্তিপুরে বিষমদ কাণ্ডের পরে বিভিন্ন এলাকাতে চোলাই বন্ধে লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে প্রশাসন। পরিবেশকর্মীরা বলছেন, বিষমদে মানুষের মৃত্যুর অভিযোগ উঠলে খবর হয়। কিন্তু শুধু মানুষের মৃত্যু ঠেকাতেই নয়, দূষণের হাত থেকে পরিবেশকে বাঁচাতেও চোলাই তৈরি বন্ধ করা প্রয়োজন।

Advertisement

পরিবেশকর্মীরা জানান, চোলাই তৈরি করতে প্রচুর জল প্রয়োজন হয়। সেই কারণে নদী, খাল, নয়ানজুলি বা পুকুরের ধারে চোলাই তৈরি করা হয়। চোলাইয়ের উপকরণ, হাঁড়ি-কলসি জলে চুবিয়ে রাখতে হয়। চোলাইয়ের বর্জ্য জল সরাসরি জলাশয়ে ফেলা হয়। তাতেই জলাশয়ের বাস্তুতন্ত্রের দফারফা হয় বলে অভিযোগ।

হুগলি জেলার বিভিন্ন জায়গায় চোলাই তৈরি হয়। বলাগড়ের বাকুলিয়া-ধোবাপাড়া পঞ্চায়েত এলাকায় বেহুলা নদীর ধারে চোলাই তৈরি কার্যত কুটির শিল্পে পরিণত হয়েছে। সেখানে গিয়ে দেখা গিয়েছে, নদীর জল কালো হয়ে গিয়েছে। জল এতটাই দূষিত যে তা চাষের কাজে ব্যবহার করা যায় না বলে গ্রামবাসীরাই জানান। পুরশুড়ার রাউতারায় আকবরি খালের অবস্থাও তথৈবচ। প্রায় আধ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই খালের পাশে চোলাই তৈরির কারবার। খালের কালো জল চোলাই ছাড়া আর অন্য কাজে ব্যবহার করা যায় না বলে অভিযোগ। গোঘাটের মথুরার পুকুর, সিঙ্গুরে পলাশপুকুরের দিঘি, তারকেশ্বরের সন্তোষপুরের ভাটার খাল— সবই একইরকম দূষিত।

Advertisement

চণ্ডীতলার বরিজহাটির বাসিন্দা পরিবেশকর্মী শিবপ্রসাদ খাঁড়ার অভিযোগ, ‘‘এক সময় সরস্বতী নদীর পাড়ে চোলাই তৈরি হত। তা থেকে নদীর জলে দূষণ ছড়িয়েছিল। এখন অবশ্য ওই সব জায়গায় চোলাই তৈরি বন্ধ রয়েছে। তবে নানা কারণে নদীও বেহাল।’’ পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় মনে করেন, চোলাই তৈরির বর্জ্য নদী দূষণের অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, ‘‘চোলাই তৈরিতে প্রচুর জল লাগে। তৈরির পরে নিষ্কাষিত জল অত্যন্ত দূষিত হয়। তা গিয়ে সরাসরি জলাশয়ে পড়ে। ফলে, জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ অনেক কমে যায়। ওই জলে মাছচাষ হয় না। মাছ মরে যায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement