শিবির বানচালে অভিযুক্ত আন্দোলনকারীরা

টেবিল-চেয়ার উল্টে হামলা ভাবাদিঘিতে

বৃহস্পতিবার ফের ওই স্কুলে আয়োজিত শিবিরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল ‘দিঘি বাঁচাও কমিটি’র লোকজনের  বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোঘাট শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ০০:৫৫
Share:

উল্টে দেওয়া হয়েছে টেবিল (উপর)।

এক সপ্তাহ আগে গোঘাটের ভাবাদিঘি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আয়োজিত প্রশাসনের শিবিরে আন্দোলনকারীদের কেউ হাজির হননি। বৃহস্পতিবার ফের ওই স্কুলে আয়োজিত শিবিরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল ‘দিঘি বাঁচাও কমিটি’র লোকজনের বিরুদ্ধে। উল্টে দেওয়া হয় টেবিল-চেয়ার।

Advertisement

‘দিঘি বাঁচাও কমিটি’র সম্পাদক সুকুমার রায়ের অভিযোগ, “পড়া বন্ধ রেখে মহকুমাশাসকের নেতৃত্বে স্কুলে সরকারি ক্যাম্প করা হয়েছে। বৃষ্টিতে ছেলেদের বাইরে বের করে দিয়ে ‘উন্নয়ন-যজ্ঞ’ চালানো হচ্ছে। গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারি কার্যালয় বানিয়ে দিয়েছে। গ্রামের মানুষ তারই প্রতিবাদ করেছেন।”

তবে মহকুমা প্রশাসনের দাবি, স্কুল বন্ধ করা হয়নি। পাশে স্কুল চলছিল। ঝামেলার পর স্কুল বন্ধ হয়। মহকুমাশাসক লক্ষ্মীভব্য তানিরু বলেন, ‘‘এলাকায় অশান্তি এবং স্কুলের সম্পত্তি ভাঙচুরের আশঙ্কায় আমরা শিবির বন্ধ করেছি। তবে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কেউ থাকলে তাঁদের জন্য শিবির চালু থাকছে।’’

Advertisement

ঝাঁটা হাতে আন্দোলনকারী মহিলারা হাজির শিবিরে। নিজস্ব চিত্র

স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুজিত পাত্র এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

ভাবাদিঘিতে রেলপথের সমস্যা মেটাতে এর আগেও জেলা প্রশাসনের তরফে নানা প্রকল্পের সুফল পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়। কিন্তু যতবারই জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের কর্তারা এসেছেন বিক্ষোভের মুখে ফিরে যেতে হয়েছে তাঁদের। সম্প্রতি নতুন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি ভাবাদিঘিতে শিবির করার নির্দেশ দেন। সেই মোতাবেকই গত শুক্রবার প্রথমবার শিবির হয়। বৃহস্পতিবার দিঘির উত্তরপাড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছিল দ্বিতীয় দিনের শিবির।

মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন শিবির থেকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং ত্রিপল, শাড়ি, চাল বণ্টনের ব্যবস্থা হয়। গত শুক্রবারের শিবিরে ছিল মূলত হাতে হাতে জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র, জাতিগত শংসাপত্র, রেশন কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা। এ ছাড়া ভোটার কার্ড, রাস্তা-ঘাট আছে কিনা দেখে চটজলদি ব্যবস্থা-সহ কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী প্রভৃতি সরকারি প্রকল্পগুলির সুযোগ নিতে উৎসাহিত করা।

বৃহস্পতিবার শিবির শুরু হয় দুপুর সওয়া ১২টা থেকে। সেই শিবিরে গ্রামের পশ্চিমপাড়া থেকে লোকজনের ভিড় হলেও আন্দোলনকারীরা কেউ হাজির হননি। বেলা দেড়টা নাগাদ দক্ষিণপাড়ার কয়েকজন মহিলা এসে দাবি করেন, স্কুল বন্ধ করে শিবির করা যাবে না। পশ্চিমপাড়া থেকে যাঁরা শিবিরে ত্রাণ বা স্বাস্থ্য শিবিরে পরিষেবা নিতে এসেছিলেন তাঁরা প্রতিবাদ করে দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দাদের পাল্টা হুমকি দেন বলে অভিযোগ।

এরপরই দক্ষিণপাড়ার মহিলারা টেবিল উল্টে, কাগজ ছড়িয়ে হামলা করেন বলে অভিযোগ। মহকুমাশাসক-সহ আধিকারিকদের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখানো হয়। দক্ষিণপাড়ার কয়েকজন মহিলাকে বলতে শোনা যায়, খালি পশ্চিমপাড়ার জন্য সব দেওয়া হবে কেন? আধিকারিকদের কয়েকজন তাঁদের থামার অনুরোধ করে বলেন, “আপনারা এলেই সব পরিষেবা পাবেন।” ততক্ষণে ‘দিঘি বাঁচাও আন্দোলন’-এর সদস্যেরাও শিবির বন্ধের দাবি জানিয়ে হট্টগোল শুরু করেন। ফলে শিবির বন্ধ হয়ে যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement