ধৃত: নিজস্ব চিত্র
থার্মোকলের বাক্সবন্দি অবস্থায় শুক্রবার চণ্ডীতলার একটি বাড়ি থেকে প্রায় দেড়শো কচ্ছপ উদ্ধার করেছিল ডানকুনি থানার পুলিশ। পাচারের অভিযোগে তিন যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ বার পাচার চক্রের মাথাদের খোঁজে নামল পুলিশ।
তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের অনুমান, এর পিছনে বড়সড় চক্র রয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই চক্রে জড়িত বাকীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ভিন্ রাজ্যে বা দেশের বাইরে কচ্ছপগুলি পাচারের মতলব ছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ হুগলি বন দফতরের রেঞ্জ অফিসার গৌতম ঘোষের দাবি, কচ্ছপগুলি ‘ইন্ডিয়ান সফ্ট শেলড টার্টল’ প্রজাতির। প্রাণী-বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, এগুলি ‘স্পটেড পন্ড টার্টলস’ প্রজাতির। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাড়িতে রাখার জন্য এই ধরনের কচ্ছপের চাহিদা রয়েছে। এ দেশ থেকে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা হয়ে এগুলি পাচার করা হয়।
শুক্রবার ভোরে ডানকুনির কালীপুরে বীরেন দাস এবং প্রশান্ত ঘোষ নামে দুই যুবক পিঠে স্কুলব্যাগ নিয়ে স্টেশনের দিকে হেঁটে যাচ্ছিল। সন্দেহ হওয়ায় টহলরত পুলিশকর্মীরা ব্যাগ খুলে দেখেন, কাপড়ে জড়ানো অবস্থায় ৮টি কচ্ছপ। দুই যুবকের মোবাইলে বিভিন্ন প্রজাতির কচ্ছপের ছবি ছিল। তাদের থানায় নিয়ে গিয়ে জেরা করে চণ্ডীতলার আদকপাড়ায় বীরেনের ভাই ধীরেনের ভাড়াবাড়ি থেকে বাকী কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়। খবর দেওয়া হয় বন দফতরে। গ্রেফতার করা হয় তিন জনকেই।
পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, বর্ধমান থেকে কচ্ছপগুলি আনা হয়েছিল। এক-একটির দাম প্রায় ২৫ হাজার টাকা। বীরেনদের দায়িত্ব ছিল কেষ্টপুরে এক জনের হাতে সেগুলি পৌঁছে দেওয়ার। ধৃতদের শনিবার শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের সাত দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
শনিবার দুপুরে ডানকুনি থানায় গিয়ে দেখা গেল, একটি চৌবাচ্চায় কচ্ছপগুলি রাখা। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, ছোট জায়গায় ঠাসাঠাসি করে থাকায় অন্তত ৩০টি কচ্ছপ মারা গিয়েছে। এক পুলিশকর্তার অবশ্য দাবি করেছেন, কোনও কচ্ছপই মারা যায়নি। বিকেলে বন দফতরের লোকেরা কচ্ছপগুলি নিয়ে যান। রেঞ্জ অফিসার জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশমতো কচ্ছপগুলিকে নির্দিষ্ট জায়গায় ছেড়ে দেওয়া হবে।