প্রতীকী ছবি।
ডিজে বক্স বাজানো নিষিদ্ধ। কিন্তু যে কোনও উৎসব, অনুষ্ঠানে নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ডিজে বক্স বাজানো চলছেই। এ বছর দুর্গাপুজোয় ডিজের দাপট বন্ধ করতে কোমর বেঁধে নামছে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট। পুজো কমিটিকে শুধু খাতায় কলমে নির্দেশ দেওয়া নয়, বরং এ নিয়ে প্রচার চালানো হবে জোরকদমে। ডিজে যাঁরা ভাড়া দেন, তাঁদেরও সতর্ক করা হবে। এর পরেও আইন ভেঙে ডিজে বক্স বাজানো হলে, তা বাজেয়াপ্ত করা হবে।
কমিশনারেটের কর্তারা মানছেন, শুধু দুর্গাপুজো নয়, বরং বিয়ে, অন্নপ্রাশন থেকে পারিবারিক নানা অনুষ্ঠান, ধর্মীয় উৎসব বা বছরের বিশেষ দিনে ডিজে বাজানো কার্যত রীতি হয়ে গিয়েছে। সেই কারণে শুধু উৎসবের মরশুম নয়, বছরভর যাতে ডিজেতে লাগাম পরানো যায় সেই বিষয়েও ভাবনাচিন্তা করবেন তাঁরা। তবে আপাতত দুর্গাপুজো নিয়েই তাঁরা ভাবছেন। ঠিক হয়েছে আগামী ২ অক্টোবর চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে ডিজে বন্ধের আর্জি নিয়ে সচেতনতা প্রচার করা হবে পুলিশের তরফে। ‘কৌতুহলী বিজ্ঞান সংস্থা’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরাও তাতে সামিল হবেন।
চুঁচুড়ার ওই সংগঠনের তরফে দীর্ঘদিন ধরেই ডিজে এবং শব্দবাজি বন্ধের দাবিতে আন্দোলন চলছে। এক মাস আগে এই দাবিতে তারা চুঁচুড়া থানায় স্মারকলিপি দেয়। চুঁচুড়া, চন্দননগরের নানা জায়গায় পোস্টারও লাগিয়েও প্রচার করছেন তাঁরা। মঙ্গলবার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় ওই সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানেই পুলিশের তরফে ডিজে বন্ধের কর্মসূচি নেওয়ার কথা জানানো হয়। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির সদস্যরা জানান, ঘড়ির মোড়ের কর্মসূচিতে স্কুল পড়ুয়ারাও মানুষকে সচেতন করবে। শব্দবাজি এবং ডিজের প্রচণ্ড আওয়াজে হৃদরোগ এবং কানের নানা সমস্যা হতে পারে। এই ব্যাপারে বোঝানোর জন্য চিকিৎসকদেরও উপস্থিত করানোর চেষ্টা করা হবে। বিলি করা হবে লিফলেট।
এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘অন্যান্য জায়গাতেও এই ভাবে কর্মসূচির কথা ভাবা যেতে পারে। মানুষ সচেতন হলেই সমস্যা মিটবে।’’ পুলিশ জানায়, ডিজে বাজানো যে নিষিদ্ধ তা পুজোর অনুমতি দেওয়ার সময় লিখিত ভাবে উদ্যোক্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়। এ বার ডিজে যাঁরা ভাড়া দেন, তাঁদেরও ডেকে সতর্ক করে দেওয়া হবে যাতে তাঁরা ওই বক্স ভাড়া না দেন। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘যাঁরা শব্দবাজি বা তারস্বরে ডিজে বাজিয়ে আনন্দ করেন, তাঁরা অন্যদের কথা ভাবেন না। প্রচণ্ড আওয়াজে বয়স্ক, শিশুদেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়। এই বিষয়টি সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করতে হবে।’’
পুলিশকর্তাদের পরামর্শ, শব্দবাজি বা ডিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। ফলে সাধারণ মানুষ এই বিষয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে কমিশনারেটে বা থানায় জানাতে পারেন। প্রয়োজনে তাঁদের পরিচয় গোপন রাখা হবে। ভুক্তভোগীদের একাংশের বক্তব্য, প্রত্যেক বছরই নির্দেশ থাকে কাগজ-কলমে। কালীপুজোর আগে পুলিশ শব্দবাজি বন্ধ নিয়ে আশ্বাস দিলেও তাতে খুব একটা কাজ হয় না। এ বার অবশ্য দুর্গাপুজোর আগেই পুলিশের তরফে সচেনতামূলক প্রচারের কর্মসূচি নেওয়ায় তাঁরা আশাবাদী।