—ফাইল ছবি
দুর্গা, জগদ্ধাত্রী, কার্তিক, ছট, সরস্বতী— সব পুজোই মিটেছে। এই সব উৎসবে ডিজের দৌরাত্ম্য কোথাও নিয়ন্ত্রিত হয়েছে, কোথাও দাপট বেড়েছে। এ বার সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষা। লাগাম পরবে ডিজের দৌরাত্ম্যে? সাধারণ মানুষের দাবি, ‘অনাচার’ হলে পুলিশ ব্যবস্থা নিক।
চুঁচুড়ার একটি বিজ্ঞান সংস্থার সদস্যদের দাবি, তাঁরা জেনেছেন, মানকুণ্ডু স্টেশনের কাছে একটি অনুষ্ঠানস্থলে আগামী শুক্রবার, ভ্যালেন্টাইন’স ডে’তে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ডিজে বাজানোর কর্মসূচি রয়েছে। সোমবার ওই সংগঠনের তরফে চন্দননগর কমিশনারেটের এসিপি (১) দফতরে স্মারকলিপি দিয়ে ওই অনুষ্ঠান স্থগিতের আর্জি জানানো হয়েছে।
সংগঠনের এক সদস্য বলেন, ‘‘আনন্দের নামে তারস্বরে বক্স বা মাইক বাজালে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটবে। সেই কারণেই খবর পেয়ে পুলিশকে আগাম জানানো হল।’’ পুলিশ জানিয়েছে, আইনের বাইরে গিয়ে মাইক-বক্স বাজানো হলে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে।
ডিজে বন্ধের দাবিতে কয়েকটি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে রবিবার এক অনুষ্ঠান হয় পোলবার অমরপুরে। উদ্যোক্তারা জানান, সেখানে ডিজে-র বিপদ নিয়ে বক্তব্য পেশ করা হয়। স্কুল পড়ুয়ারা নাচ, গান, আবৃত্তি পরিবেশন করে। ওই অনুষ্ঠান হয় পরিবেশ বিষয়ক। কাটোয়া থেকে আদিবাসী শিল্পীদের একটি দল এসেছিল। তাঁরা ধামসা-মাদল বাজিয়ে ডিজে-বিরোধী গান পরিবেশন করেন। তাঁদের বুকে ঝুলছিল প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা — ‘নো ডিজে’।
বছরের বিভিন্ন সময়ে নানা উৎসব থেকে পারিবারিক অনুষ্ঠানে তারস্বরে ডিজে বক্স বাজিয়ে হুল্লোড় দীর্ঘদিনের সমস্যা। অভিযোগ, কিছু লোকের এই কাজে অধিকাংশ মানুষ নাজেহাল হন। বৃদ্ধবৃদ্ধা, ছোটরা সমস্যায় পড়েন। পড়াশোনার ক্ষতি হয়। ক্ষতি হয় পশুপাখিদেরও। নিষিদ্ধ ওই বক্স বাজানো বন্ধ করতে হুগলির বিভিন্ন জায়গায় নাগরিক আন্দোলন দানা বেঁধেছে।
জাঙ্গিপাড়ার একটি সংগঠন এ নিয়ে আন্দোলনে নামায় সম্প্রতি তার সভাপতি প্রভাস দাসের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ হয়। ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে শ্রীরামপুর মহকুমার বিভিন্ন গণ-সংগঠন। সোমবার তারা যৌথ ভাবে মহকুমাশাসক (শ্রীরামপুর) সম্রাট চক্রবর্তীর কাছে স্মারকলিপি দেয়। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, মহকুমার সর্বত্রই ডিজে এবং শব্দবাজির তাণ্ডব বন্ধের ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। প্রশাসনের তরফে এই বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হয়।