—ফাইল চিত্র
ভোটার তথ্য যাচাই কর্মসূচিতে (ইভিপি) যাতে সকলে শামিল হন, সে জন্য বিশেষ অভিযান শুরু করল হাওড়া জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার জেলাশাসক মুক্তা আর্য সব দফতরের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানেই বিভিন্ন দফতরের সরকারি কর্মী এবং সাধারণ মানুষ কী ভাবে ওই কর্মসূচিতে শামিল হবেন, তার রূপরেখা জেলাশাসক
বাতলে দেন।
প্রশাসন সূত্রের খবর, বিডিওদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁর অধীনে থাকা কর্মচারীদের ওই কাজ করানোর। স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের ইভিপি করানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে। পুলিশকর্মীদের ইভিপি করানোর দায়িত্ব বর্তেছে গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপারের উপরে। ইভিপি করাতে হবে সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও। একই ভাবে স্বাস্থ্য দফতরের তত্ত্বাবধানে ইভিপি করাতে হবে আশাকর্মীদের। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ইভিপি করাবে জেলা সমাজকল্যাণ দফতর।
ইভিপি নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট অ্যাপ নির্ভর কর্মসূচি। ওই অ্যাপে প্রত্যেক ভোটার তাঁর নিজের ভোটার কার্ড সংক্রান্ত সব তথ্য জানতে পারবেন। সংশোধন করতে পারবেন ভুলভ্রান্তি। এইসব কাজ আপাতত ১৫ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করতে হবে, নির্বাচন কমিশনের এমনই নির্দেশ। অনলাইনে এই কাজের জন্য কম্পিউটার বা অ্যানড্রয়েড ফোন আবশ্যক।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বিডিও, সিএমওএইচ, জেলা সমাজকল্যাণ দফতরের কর্তা এবং পুলিশকর্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন তাঁদের শাখা অফিসগুলিতে অ্যানড্রয়েড ফোন আছে, এমন বাছাই করা কর্মীদের বিষয়টি শিখিয়ে দেন। তাঁরাই সব সরকারি কর্মীর ইভিপি করিয়ে দেবেন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির পঞ্চায়েত-ভিত্তিক মহাসঙ্ঘগুলির (অনেকগুলি গোষ্ঠীর সমন্বয়ে একটি মহাসঙ্ঘ গঠিত হয়) পরিচালকমণ্ডলীকে বলা হয়েছে, তারা যেন গোষ্ঠীর সদস্য এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ইভিপি করিয়ে দেয়। মহাসঙ্ঘগুলিতে এখন কম্পিউটার রয়েছে। ফলে, তাদের পক্ষে ইভিপি করানো সম্ভব। সেখানেই তিনি এই সব সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।
সরকারি কর্মীদের বাইরে যে অসংখ্য সাধারণ মানুষ আছেন, তাঁরা কী ভাবে ওই কর্মসূচিতে শামিল হবেন?
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সাধারণ মানুষদের মধ্যে যাঁদের অ্যানড্রয়েড ফোন নেই, তাঁরা পরিচিত বা কোনও আত্মীয়ের অ্যানড্রয়েড ফোনে বা তথ্যমিত্র কেন্দ্রে গিয়ে তথ্য যাচাই করিয়ে নিতে পারেন। কোনও সহায়তার দরকার হলে তাঁরা পঞ্চায়েত স্তরে নির্বাচন দফতরের যে সব কর্মী কাজ করছেন, তাঁদের কাছে যেতে পারবেন। বিডিওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন পঞ্চায়েত স্তরে কর্মশালা করে বিষয়টি গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে দেন। ইতিমধ্যেই এই ধরনের কর্মশালা শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।
বৃহস্পতিবার আমতা-১ ব্লকের রসপুর পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় এ ধরনের একটি কর্মশালা হয়। কলেজের ছাত্রছাত্রী থেকে অনেক সাধারণ মানুষ হাজির ছিলেন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, বিষয়টি নিয়ে অহেতুক গুজব বা ভীতি যাতে না-ছড়ায় সে জন্যই বিডিও-দের কর্মশালা করতে বলা হয়েছে।