সচেতনতায়: ডিজে বন্ধের দাবিতে রবি ও সোমবার মিছিল জাঙ্গিপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র
প্রতিবাদের সুর ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।
ডিজের প্রচণ্ড আওয়াজ বন্ধের দাবিতে বেশ কিছু দিন ধরেই হুগলির নানা প্রান্তে আন্দোলনে নামছেন সাধারণ মানুষ। সচেতনতা ছড়াতে দু’-এক জায়গায় তাঁদের পাশে দেখা যাচ্ছে পুলিশকেও। জাঙ্গিপাড়া ব্লকের রাজবলহাটেও ডিজের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের আন্দোলন চলছেই। তাঁরা ঠিক করেছেন, ক্রমাগত প্রচারের মাধ্যমেই ডিজে ব্যবহারকারীদের সচেতন করার কাজ চালানো হবে। সে জন্য প্রজাতন্ত্র দিবসে মিছিল হল। পা মেলালেন বৃদ্ধবৃদ্ধারাও। পুলিশ এবং পঞ্চায়েত দফতরে স্মারকলিপি দেওয়া হল। পরের দিন মিছিল করল স্কুলের কচিকাঁচারা। মঙ্গলবার জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের শীর্ষকর্তার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হল।
শব্দ-দূষণের বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই লড়াই চালিয়ে আসছেন রাজবলহাটের একটি সংগঠনের সদস্যরা। তাঁদের সঙ্গেই শামিল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রবিবারের মিছিল থেকে দাবি উঠল, উৎসব হোক অন্যের সমস্যা না করে। ওই দিন দুপুরে শব্দ-দূষণের বিরুদ্ধে রাজবলহাট-১ ও ২, দিলাকাশ এবং জাঙ্গিপাড়া পঞ্চায়েতে এবং থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়। জাঙ্গিপাড়া থানার ওসি সোমনাথ দে’র সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশের তরফে তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হয়, ডিজে বাজানোর খবর পেলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিকেলে স্থানীয় দিঘির পাড় এলাকা থেকে মৌনী মিছিল শুরু হয়। ঘণ্টা তিনেক ধরে বিভিন্ন এলাকায় ঘোরে সেই মিছিল। শ’দেড়েক গ্রামবাসীর ভিড়ে অনেক মহিলা ছিলেন। শামিল হন ষাটোর্ধ্বরাও।
মিছিলে হাঁটেন রাজবলহাট-২ পঞ্চায়েতের প্রধান তুষারকান্তি রক্ষিত। তিনি বলেন, ‘‘অল্প কিছু মানুষ ডিজে বাজিয়ে আনন্দ পান। কিন্তু এতে যে ছোটদের বা বয়স্কদের কতটা অসুবিধায় পড়তে হয়, তা তাঁরা ভেবে দেখেন না। এই অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না। তাই, পঞ্চায়েতের তরফে শব্দ-দূষণ বন্ধে আমরা সব চেষ্টাই করব। পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখব। অভিভাবকেরাও যেন ছেলেদের বোঝান ডিজের আওয়াজে অন্যদের কতটা সমস্যায় পড়তে হয়।’’
সোমবার একই দাবিতে পথে নেমেছিল গুল্টিয়া হেমচন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। তাদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। শব্দদূষণ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মঙ্গলবার রাজবলহাটের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির তরফে হুগলির (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার তথাগত বসুর দফতরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। ওই সংস্থার তরফে চিকিৎসক প্রভাস দাস বলেন, ‘‘পুজো, উৎসবে তারস্বরে ডিজে বক্স বা মাইক বাজানোটা রীতি হয়ে গিয়েছে। গ্রামবাসীদের আন্দোলনের ফলে কিছু মানুষ সচেতন হয়েছেন। তাঁরা বিকট শব্দে বক্স বাজানো বন্ধ করেছেন। কিন্তু সকলের মধ্যে এই সচেতনতা এখনও আসেনি।