থার্মাল টেস্ট হচ্ছে বাসযাত্রীদের। মঙ্গলবার আরামবাগের সরকারি বাস ডিপোতে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
সরকারি ও বেসরকারি অফিস আংশিক খুলেছে। কিন্তু রাস্তায় বাস কই! অফিসযাত্রীরা যাবেন কিসে?
সোমবার থেকে রাস্তায় বেসরকারি বাস চলতে পারে বলে জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু সে দিন তো নয়ই, মঙ্গলবারেও বাসের দেখা মিলল না গ্রামীণ হাওড়ায়। সরকারি বাস চলেছে নামমাত্র। তাতে গাদাগাদি ভিড়। ফলে, অফিসযাত্রীদের অনেককেই বেশি টাকা দিয়ে ছোট গাড়িতে উঠতে হয়েছে। অনেকে ট্রাকেও উঠেছেন।
আগে রাজ্য সরকার ২০টি আসনে যাত্রী নিয়ে বাস চালানোর কথা বলেছিল। তাতে বাস-মালিকেরা ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। সেই প্রস্তাব না-মেনে সরকার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে জানানয়, একটি বাসে যত আসন আছে, তত যাত্রী তুলতে পারবে বাস। তারপরেও কেন বেসরকারি বাস রাস্তায় নেই?
বাস-মালিকেরা মনে করছেন, এখনও যা পরিস্থিতি, তাতে বাস চালানো লোকসান। ভাড়া বাড়ানোতেও তাঁদের সায় নেই বলে জানিয়েছেন গ্রমীণ হাওড়ার একাধিক বাস-মালিক। উলুবেড়িয়া মহকুমা বাস-মালিক সংগঠনের সম্পাদক গোপাল পাল জানান, এখানে বেআইনি অটো এবং ছোট গাড়ির দৌরাত্ম্যে তাঁদের এমনিতেই নাভিশ্বাস উঠছে। ভাড়া বাড়ালে বাসে আর কেউ উঠবেন না।
তা হলে উপায়?
গোপাল বলেন, ‘‘দেখা যাক, ৮ জুন থেকে কী হয়! ওই দিন থেকে অফিসে আরও হাজিরা বাড়বে।ফলে, অনেক লোক বেরোবেন। রাস্তায় লোক না-বাড়লে বাস চালিয়ে লাভ হবে না। এখন রাস্তায় তেমন লোকজন নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি।’’ লোকাল ট্রেন চলা পর্যন্ত অপেক্ষার পক্ষেও সওয়াল করেন কিছু বাস-মালিক। তাঁদের মতে, গ্রামীণ এলাকার বাসের যাত্রীর সংখ্যা নির্ভর করে লোকাল ট্রেন উপরেই। মঙ্গলবার সকালে বাগনান লাইব্রেরি মোড়ে মুম্বই রোডে দেখা গেল অফিসযাত্রীদের থিকথিকে ভিড়। কলকাতাগামী দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের একটি বাস আসামাত্র তাতে অফিসযাত্রীরা ঝাঁকে ঝাঁকে উঠে পড়লেন অফিসযাত্রীরা। দূরত্ব-বিধিকে কেউ আমল দিলেন না। অনেকে দাঁড়িয়েও গেলেন। বরুণ রায় নামে এক অফিসযাত্রী বললেন, ‘‘কী আর করা যাবে! বেসরকারি বাস নেই। এ ভাবেই যেতে হবে।’’
বাসে দাঁড়িয়ে না-যাওয়ার শর্ত খুব বেশি কার্যকর হবে বলে মনে করছেন না বাস-মালিকেরা। তাঁরা জানান, বাসে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় অফিসের সময়ে। অনেকে দাঁড়িয়ে যান। তাতেই ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে যায়। গোপাল বলেন, ‘‘বাসে শুধু বসে গেলেও দু’জন যাত্রীকে ঘেঁষাঘেষি করে বসতে হবে। তাতেও সংক্রমণ ঘটতে পারে। দাঁড়িয়ে গেলে এর চেয়ে আর বেশি ক্ষতি কী হবে?’’
জেলা পরিবহণ দফতরের কর্তারা অবশ্য এখনও পর্যন্ত বাস-মালিকদের সঙ্গে কোনও বৈঠক করেননি। শীঘ্রই সেই বৈঠক হবে বলে জানিয়েছে ওই দফতর। তাতে সমাধান সূত্র বেরোবে বলেও আশা করছেন দফতরের তাঁরা।