এত্তা জঞ্জাল: গঙ্গার ধারে আবর্জনার স্তূপ। —নিজস্ব িচত্র
শত প্রচারেও কারও হুঁশ ফিরছে না।
গত বছর উলুবেড়িয়া রাসমেলার বর্জ্য জমেছিল গঙ্গায়। একই ছবি এ বারও!
দূষণের হাত থেকে গঙ্গাকে বাঁচাতে নানা নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। দূষণ নিয়ে সরব বহু পরিবেশপ্রেমী। পুজোর মরসুমে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এবং পুর কর্তৃপক্ষকে এ বার দূষণ ঠেকাতে তৎপর হতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু মেলার মরসুম শুরু হতেই উলুবেড়িয়ায় গঙ্গা দূষণের ছবিটা আর এক বার সামনে এল।
রাসমেলাই উলুবেড়িয়া শহরের সবচেয়ে পুরনো মেলা। এ বার ৬৮ তম বর্ষ। গঙ্গার তীরে উলুবেড়িয়া কালীবাড়ি প্রাঙ্গণে এক মাস ধরে চলে মেলাটি। কালীবাড়ি কমিটিই মেলার উদ্যোক্তা। এ বার দিন কুড়ি আগে মেলা শুরু হয়। বহু দোকান বসে। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ মেলায় আসেন।
রবিবার মেলায় গিয়ে দেখা গেল, নদীর তীরে পড়ে রয়েছে থার্মোকলের থালা-বাটি-গ্লাস, প্লাস্টিকের বোতল। জোয়ারের জলে সেগুলো ভেসে যাচ্ছে। স্নানার্থীরা সে সব সরিয়েই ডুব দিচ্ছেন। এক শ্রেণির দোকানদার দোকান থেকেই আবর্জনা সরাসরি নদীতে ছুড়ে ফেলছেন। অথচ, মেলা প্রাঙ্গণে যথেষ্ট পরিমাণে ভ্যাট বসানো হয়েছে।
বর্জ্য ফেলার জায়গা থাকা সত্ত্বেও গঙ্গায় কেন তা ফেলা হচ্ছে, এই প্রশ্নে সরব হয়েছেন পরিবেশপ্রেমীরা। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ঝড় উঠেছে। উলুবেড়িয়া কালীবাড়ির সম্পাদক দেবাশিস রক্ষিত বলেন, ‘‘নদীতে আবর্জনা ফেলার জন্য সকলকে আমরা বারবার নিষেধ করেছি। মেলায় আসা কিছু মানুষ হয়তো খাবার খেয়ে উচ্ছিষ্ট নদীতে ফেলছেন। সেগুলো আমরা নজর রাখব। যাতে কেউ কোনও আবর্জনা নদীতে না ফেলেন।’’
উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক তুষার সিংলা ওই কালীবাড়ি কমিটির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘‘নদী দূষণ কাম্য নয়। পুরসভা ও কমিটির পক্ষ থেকে মেলায় একাধিক ভ্যাট করা হয়েছে। তার পরেও কী ভাবে কারা নদীতে আবর্জনা ফেলছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে নজরদারি বাড়ানো হবে।’’
আবর্জনা ভাসতে দেখে এ দিন আর গঙ্গায় ডুব দিতে পারেননি মেলায় আসা সাগরিকা পাত্র। তিনি বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম, মেলা দেখে এসে নদীতে স্নান করব। কিন্তু যা নোংরা, স্নান করতে ইচ্ছে করল না।’’