মুখর: চন্দননগরের রাস্তায় নাগরিক মিছিল। ছবি: তাপস ঘোষ
শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়া, চুঁচুড়ার পরে এ বার গঙ্গাপাড়ের আর এক শহর চন্দননগর।
গত রবিবার রাতে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (জেএনইউ) ছাত্রীদের হস্টেলে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে হুগলি জেলায় নাগরিক আন্দোলন অব্যাহত। শনিবার চন্দননগরে মিছিল করলেন নাগরিকদের একাংশ। শামিল হলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তনী।
বিকেলে চন্দননগর গির্জার সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়। কলেজ পড়ুয়া, শিক্ষক থেকে চিকিৎসক, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী, শ্রমিক, সমাজকর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মী, গৃহবধূ— সকলেই উপস্থিত ছিলেন। মিছিলের সামনে ব্যানারে লেখা ছিল— ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও রাষ্ট্রীয় মদতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ-আমাদের প্রতিরোধ’। স্ট্র্যান্ড হয়ে ডাকঘর, কানাইলাল বিদ্যামন্দিরের সামনে দিয়ে একই জায়গায় এসে মিছিল শেষ হয়। সেখানে এই ধরনের নাগরিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ডাক দেওয়া হয়।
মিছিলে শামিল জেএনইউ-র প্রাক্তনী, ইতিহাসে এমফিল পর্ণীশা সরকার ব্যাখ্যা করেন, কেন ওখানে ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন চলছে। গত রবিবার যে হস্টেলে হামলা চলে, ২০১৩ সাল থেকে তিন বছর তিনি সেখানে আবাসিক ছিলেন। পর্ণীশার দাবি, জেএনইউ-র পড়ুয়াদের একটি বড় অংশ দুঃস্থ পরিবারের ছেলেমেয়ে। সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ সেখানে ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অনেকেই আর পড়া চালাতে পারবেন না। তাই, বর্ধিত ফি কমিয়ে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবিতে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করছেন পড়ুয়ারা।
পর্ণীশার অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রকে বেসরকারি হাতে বেচে দেওয়ার নীতি নিয়েছে। শিক্ষাও তার মধ্যে একটি। ২০১৪ সাল থেকে উচ্চশিক্ষার বেসরকারিকরণের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে, মূলত জেএনইউ-কে দূর্বল করার কাজ চলছে প্রশাসনিক তরফে।’’ এই অপচেষ্টা বন্ধের জন্যই প্রাক্তন ছাত্রী হিসেবে তিনি এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন বলেও জানান ওই তরুণী।
কর্মসূচির উদ্যোক্তাদের তরফে বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেএনইউ-সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে ধরনের পরিকল্পিত হামলা করা হয়েছে, তার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। সহ-নাগরিক হিসেবে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানো এবং রাষ্ট্রের ভুল নীতি থেকে দেশকে রক্ষার চেষ্টা করা আমাদের কর্তব্য। সেই কারণে, লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’