অযত্ন: এমনই বেহাল অবস্থা হাওড়ার পার্কগুলির। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
গত বছরেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, হাওড়া পুরসভার পার্কগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হবে কোনও দক্ষ বেসরকারি সংস্থাকে। আট মাসে সেই সিদ্ধান্ত যেমন কার্যকর হয়নি, তেমনই পার্কগুলির বেহাল অবস্থারও পরিবর্তন হয়নি।
বছর ছয়েক আগে হাওড়ায় পার্ক ছিল হাতে গোনা। হাওড়া পুরসভায় তৃণমূল বোর্ড আসার পরে ৬৬টি ওয়ার্ডে ৯০টির বেশি পার্ক তৈরি হয়েছে। প্রথম দিকে সেগুলির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হলেও পরের দিকে দেখভাল শিকেয় ওঠার অভিযোগ আসে। ২০১৮-র ডিসেম্বরে তৃণমূল পুর বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে সেই অভিযোগ বাড়তেই থাকে।
প্রায় কোটি টাকা খরচ করে তৈরি পার্কগুলি আগাছায় ভরে যায়। ধীরে ধীরে আবর্জনা আর উচ্ছিষ্ট ফেলার জায়গায় পরিণত হয় সে সব। অবহেলার ছাপ স্পষ্ট মনীষীদের মূর্তিতেও। পাখির বিষ্ঠায় ঢেকেছে মূর্তির মুখ-চোখ। কোনওটির গা বেয়ে নেমে গিয়েছে আগাছা। পার্কগুলির বেশির ভাগেই নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় অনেক জায়গা থেকে রেলিং চুরি গিয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকি কয়েকটি পার্কের পাঁচিল ভেঙে পেভার ব্লকও তুলে নিয়ে গিয়েছে চোরেরা।
এই সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বছর জুলাইয়ে পুরসভার তৎকালীন পরিচালকমণ্ডলী সিদ্ধান্ত নেন, দরপত্রের মাধ্যমে একাধিক বেসরকারি সংস্থাকে পার্কগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হবে। স্থির হয়, বেহাল ৭৫টি পার্ক আকার অনুযায়ী ৯টি অংশে ভাগ করা হবে। প্রতিটি অংশের দায়িত্ব পাবে আলাদা সংস্থা। ওই সংস্থাগুলি পার্কের গাছের পরিচর্যা করবে, নতুন চারা বসাবে, সাফাই করবে। এই কাজের দক্ষ কর্মী বা পরিষ্কার করার মতো লোকবল পুরসভার নেই বলেই দাবি এক পুর আধিকারিকের। পাশাপাশি তিনি এ-ও বলেন, ‘‘যে ভাবে মুড়ি-মুড়কির মতো পার্ক হয়েছে, তা যে রক্ষণাবেক্ষণ করা পুরসভার পক্ষে কঠিন হবে সেটা তখনই জানা ছিল।”পরিকল্পনা মতো গত বছর দরপত্র ডেকেও সেই প্রক্রিয়া সফল না হওয়ায় এই পরিস্থিতি। প্রক্রিয়া সফল হল না কেন?
উত্তরে পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘কিছু সমস্যার কারণেই আটকে আছে। পরে এ নিয়ে ব্যবস্থা করা হবে।’’ কিন্তু সমস্যা ঠিক কোথায়, তা স্পষ্ট করে পুর কর্তৃপক্ষ জানাননি। ফলে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস জোরালো হচ্ছে না পুরসভারই একটি অংশের কাছে।