Pandua

পঞ্চায়েত অকর্মণ্য, রাস্তা সংস্কারে উদ্যোগী স্থানীয়রাই

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের অধীনে আট কিলোমিটারের এই রাস্তাটি পিচের করা হয়। এর মাঝে ওই রাস্তায় আর কোনও সংস্কার হয়নি।

Advertisement

সুশান্ত সরকার

পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২০ ০৪:০৩
Share:

তৎপর: ইটের টুকরো ফেলে রাস্তার গর্ত বোজাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। সোমবার পান্ডুয়ায়। নিজস্ব চিত্র

ভাঙা রাস্তা নিয়ে গত দু’বছর ধরে পঞ্চায়েতে অভিযোগ জানিয়ে জানিয়ে এলাকার বাসিন্দারা জুতোর সুকতলা খুইয়ে ফেলেছেন। তারপরও পান্ডুয়ার সিমলাগড়-ভিটাসিন গ্রাম পঞ্চায়েতের টনক নড়েনি। পঞ্চায়েতের উপর আস্থা হারিয়ে অবশেষে রবিবার থেকে সিমলাগড় থেকে রামেশ্বরপুর মোড় পর্যন্ত আট কিলোমিটার রাস্তা সারাই শুরু করলেন এলাকার বাসিন্দারাই। সোমবারও সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে কাজ।

Advertisement

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের অধীনে আট কিলোমিটারের এই রাস্তাটি পিচের করা হয়। এর মাঝে ওই রাস্তায় আর কোনও সংস্কার হয়নি। ২০১৮ সাল থেকে রাস্তাটি খারাপ হতে থাকে। রাস্তার মাঝে বড় বড় গর্ত হয়ে যায়। সামান্য বৃষ্টি হলে গর্তে জল জমে। রাস্তার ধারে আলো নেই। সন্ধ্যার পরে অন্ধকারে যাতায়াত মুশকিল।

শুধু তাই নয়, বেহাল ওই রাস্তা দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স যাতায়াত করতে চায় না। তার জেরে সমস্যায় পড়েন পোঁটবা, গ্রামগোয়াল, উত্তরখণ্ড, আয়মা, গোয়াড়া, চম্পকডাঙা-সহ ২৪টি গ্রামের মানুষ। এই রাস্তার উপরেই পড়ে ২৩টি প্রাইমারি আর দুটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল। সাইকেল নিয়ে স্কুলে যেতে গিয়ে অনেকবার দুর্ঘটনায় পড়েছে পড়ুয়ারা। উত্তরখণ্ড গ্রামের কলেজ পড়ুয়া তিথি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাইকেল নিয়ে পড়তে যেতে হয়। রাস্তায় আলো নেই। কতদিন গর্তে সাইকেল নিয়ে পড়ে গিয়েছি। পঞ্চায়েত দেখবে না তো কে দেখবে?’’

Advertisement

তাই প্রশাসনের উপর আর ভরসা রাখেননি এলাকার বাসিন্দারা। ইট, ঘেঁস ফেলে রবিবার থেকে শুরু হয় রাস্তা সংস্কার। সোমবারও চলে কাজ। স্থানীয় বাসিন্দা প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিল কর্মকার, সুব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে বলে বলে আমরা বিরক্ত। গেলেই বলা হয়, কাজ হবে। আর কতদিন এ ভাবে অপেক্ষা সম্ভব?’’ তাঁরা জানান, স্থানীয় ইটভাটা থেকে টুকরো ইট ও ঘেঁস নেওয়া হয়েছে। তার জন্য কোনও পয়সা দিতে হয়নি। গ্রামের বাসিন্দারাই হাতে হাতে রাস্তার গর্ত বুজিয়ে ফেলছেন। রাস্তার উপর যাতে জল না জমে তার জন্য আল কেটে দেওয়া হয়েছে।

যে কাজ পঞ্চায়েতের করার কথা, সেটা সাধারণ মানুষকে করে নিতে হল কেন? এটা কি পঞ্চায়েতের অপদার্থতা নয়? প্রধান রেজিনা খাতুনের কোনওক্রমে জবাব, ‘‘ওই রাস্তা সংস্কারের টেন্ডার শীঘ্রই হবে।’’

সিমলাগড়ের বিজেপি নেতা ভজহরি শর্মা বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে ওই রাস্তা খারাপ হয়ে পরে আছে। প্রশাসনের নজর নেই। মানুষের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে। তাই গ্রামবাসীরা রাস্তা মেরামত করছেন। এটা পঞ্চায়েতের পরাজয়।’’

হুগলি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের তরফে আমাদের বিষয়টি জানানো হয়নি। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement