আনন্দভবন ডেফ অ্যান্ড ব্লাইন্ড স্কুলে তিন পড়ুয়া। —নিজস্ব চিত্র।
লকডাউন-এর জেরে স্কুল বন্ধ। অনলাইন-এ পড়াশোনা করার সুযোগ সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের থাকলেও নেই প্রতিবন্ধী স্কুলের পড়ুয়াদের। ফলে, চিন্তায় পড়েছেন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়া এবং তাদের অভিভাবকেরা।
হাওড়ার জগৎপুরে দৃষ্টিহীনদের জন্য একটি সরকারি ও একটি বেসরকারি স্কুল আছে। পড়ুয়াদের সংখ্যা একশোর কিছু বেশি। প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় সেখানে। পড়ুয়ারা সকলেই আবাসিক। অষ্টম শ্রেণি পাশ করার পরে ‘রাইটার’ নিয়ে উচ্চশিক্ষার পড়াশোনা করে তাড়া। মূলত ‘ব্রেইল’ পদ্ধতিতে পড়ানো হয় স্কুলে।
অনসূয়া প্রামাণিক নামে এক পড়ুয়ার অভিভাবিকা বলেন, ‘‘মেয়ে জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন। অনেক চেষ্টা করে প্রতিবন্ধী স্কুলে ভর্তি করেছিলাম। এখন মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা নেই। যা শিখেছিল, এখন সেটুকুও ভুলতে বসেছে।’’ আর এক পড়ুয়ার মা গীতা সিংহের বক্তব্য, দীর্ঘদিন চর্চা না থাকলে সব ভুলে যাবে। কী করে মেয়েকে পড়াশোনা করাবো ভেবে পাচ্ছি না।’’
হাওড়া জেলায় দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের জন্য ‘আনন্দভবন ডেফ অ্যান্ড ব্লাইন্ড স্কুল’ নামে একটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে ৩০ জন দৃষ্টিহীন ও ৫০ জন মূক ও বধির পড়ুয়া রয়েছে। জেলায় বেসরকারি স্কুল রয়েছে দু’টি। পঞ্চাশ জন দৃষ্টিহীন ও শতাধিক মূক ও বধির পড়ুয়া সেখানে পড়াশোনা করে। সকলের একই সমস্যা।
আনন্দ ভবন ডেফ এন্ড ব্লাইন্ড স্কুলের শিক্ষক অজয় দাস বলেন, ‘‘দৃষ্টিহীন শিশুদের শিক্ষা অনেকাংশেই স্পর্শ নির্ভর। ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াশোনা অনলাইনে সম্ভব নয়। এ ছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে সকল পড়ুয়া বাড়ি চলে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামে পড়ুয়াদের বাড়ি ওই ছাত্রছাত্রীদের।
বেসরকারি একটি স্কুলের মূক ও বধির বিভাগের বিশেষ শিক্ষিকা মহুয়া মান্না বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের অনলাইন ক্লাস করা সম্ভব নয়। কারণ, তাদের ইশারার মাধ্যমে পড়ানো হয়। স্মার্ট ফোন কেনার ক্ষমতা নেই অনেক পড়ুয়ার পরিবারের।’’