ফাইল চিত্র।
জগদ্ধাত্রী পুজোর আর এক মাসও বাকি নেই। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের কাছে পুজোর অনুমতি চেয়ে অনলাইনে আবেদন করা যাবে। আবেদনের শেষ তারিখ আগামী ২৬ অক্টোবর। সুষ্ঠু ভাবে ওই উৎসব পালনের জন্য কোমর বাঁধছে পুলিশ-প্রশাসন। পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে এ নিয়ে কিছু পরামর্শও দিয়েছেন পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা। চন্দননগর কেন্দ্রীয় পুজো কমিটির সম্পাদক শুভজিৎ সাউ জানান, অনলাইনে আবেদন তাঁদের কার্যালয় থেকে নিখরচায় করা যাবে।
নামে ‘চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী’ হলেও আসলে এই পুজো ভদ্রেশ্বর পর্যন্ত বিস্তৃত। চন্দননগর থানা এলাকায় ১২৯টি এবং ভদ্রেশ্বর থানা এলাকায় ৪২টি অর্থাৎ মোট ১৭১টি বারোয়ারি পুজো হচ্ছে। তার মধ্যে একটি পুজোর ৭৫তম বর্ষ পালিত হচ্ছে। পাঁচটি পুজোর ৫০ তম বর্ষ এবং তিনটি পুজোর ২৫তম বর্ষ উদ্যাপিত হচ্ছে। গোটা ব্যবস্থাপনা নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চন্দননগর রবীন্দ্রভবনে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের উদ্যোগে এক বৈঠক হয়। সেখানে বিভিন্ন
বারোয়ারি পুজোর উদ্যোক্তা, কেন্দ্রীয় কমিটির কর্তারা এসেছিলেন। পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর, ডিসি (চন্দননগর) কে কান্নান, মহকুমাশাসক মৌমিতা সাহা, পুর-কমিশনার স্বপন কুণ্ডু এবং দমকল, রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা, রেল পুলিশ, আরপিএফ ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।
কমিশনারেটের কর্তারাই জানান, এ বারেও পুজোর অনুমতি দেওয়া হবে অনলাইনে। বৃহস্পতিবার থেকেই আবেদন করা যাবে। বিসর্জনের শোভাযাত্রায় বিশেষ জয়ন্তী যারা পালন করছে, তারা সর্বাধিক পাঁচটি এবং অন্য পুজো কমিটি সর্বাধিক চারটি ট্রাক নিয়ে যেতে পারবে। শোভাযাত্রায় অনেক ট্রাকেই সামনের অংশে আলো সাজানোর জন্য চালকেরা কিছু দেখতে পান না। ফলে, দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। আলোকশিল্পীদের কাছে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে আবেদন জানানো হয়েছে, চালক যাতে সামনে ভাল ভাবে দেখতে পান, সেই হিসেব করে আলো লাগাতে হবে।
এ ছাড়াও পুলিশের তরফে আবেদন জানানো হয়, প্রতি মণ্ডপে যেন সিসিটিভি এবং ঢোকা-বেরনোর গেট যথেষ্ট বড় মাপের হয়। বিসর্জনের শোভাযাত্রার আলো সাজানোর জন্য পুজোর দিনেই রাস্তায় ট্রাক দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এতে যান চলাচল এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়। তাই, আশপাশের মাঠে ট্রাক দাঁড় করানোর কথা বলা হয়। প্রতিমার উচ্চতা বেশি হওয়ায় কিছু জায়গায় ভাসানের সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হয়। এই সমস্যা সমাধানে প্রতিমার উচ্চতা ২৮ ফুটের মধ্যে রাখার আবেদনও জানানো হয়। পুলিশ কমিশনারের কথায়, ‘‘মানুষের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে পুজোর উদ্যোক্তাদের কাছে কিছু আবেদন রাখা হয়েছে। তাতে অনেক সুষ্ঠু ভাবে উৎসব পালন করা যাবে। আশা করি ওঁরা ভেবে দেখবেন।’’
পুজো উদ্যোক্তাদের অনেকেরই অবশ্য বক্তব্য, পরম্পরা অনুযায়ী যাবতীয় আয়োজন হয়। এতে খুব একটা অসুবিধা হয় না। আর মাঠে ট্রাক দাঁড় করানোর চেষ্টা পুলিশ আগেও করেছিল। তাতে সমস্যা মেটেনি। উল্টে নানা অসুবিধা হয়েছে। কেন্দ্রীয় পুজো কমিটির সম্পাদক বলেন, ‘‘দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ আসেন ঠাকুর দেখতে। তাঁদের স্বাচ্ছন্দ্যে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেই লক্ষ্যেই গোটা ব্যবস্থা করতে হবে। আশা করছি, সংশ্লিষ্ট সব দফতর একযোগে এটা করবেন।’’