প্রতিবাদ: মান্দারণ পঞ্চায়েতে এবং বিডিওর কাছে বিক্ষোভ শ্রমিকদের। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
কাজের মাপ অনুযায়ী শ্রমিকেরা মজুরি পাবেন বলে নতুন নিয়ম হয়েছে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে গোঘাট-২ ব্লকের বেতবনি গ্রামে কাজ বন্ধ করলেন ওই প্রকল্পের শ্রমিকরা। আগের মতো দিনপ্রতি নির্ধারিত মজুরি দেওয়ার দাবিতে স্থানীয় মান্দারণ পঞ্চায়েতে এবং বিডিওর কাছে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা।
পঞ্চায়েত প্রধান সানোয়ারা বেগম বলেন, ‘‘বিষয়টা ব্লক প্রশাসন দেখছেন।” বিডিও অভিজিৎ হালদার বলেন, ‘‘প্রকল্পের নিয়মমতো কাজের মাপ অনুযায়ী শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া হবে। শ্রমিকদের তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
ওই পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, বেতবনি গ্রামে নতুন পুকুর খননের কাজ শুরু হয়েছে দিন সাতেক আগে। সোমবার পঞ্চায়েতের ইঞ্জিনিয়ার কাজ খতিয়ে দেখতে এসে মাপজোপ করেন। তাতে দেখা যায়, প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী যেখানে শ্রমিকদের মাথাপিছু ৬২ ঘনফুট মাটি কাটলে পুরো মজুরি ১৯১ টাকা পাওয়ার কথা, সেখানে অধিকাংশ শ্রমিক ১০ থেকে ২০ ঘনফুট মাটি কেটেছেন। মাটি কাটার মাপ অনুযায়ীই ‘মাস্টাররোল’ হবে বলে ইঞ্জিনিয়ার জানিয়ে দেন।
এ দিন ২৫৯ জন শ্রমিকের ওই কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারের মুখে ওই কথা শুনে তাঁদের বেশিরভাগই আর কাজ করতে চাননি। যে ক’জন কাজে লাগেন, অন্য শ্রমিকেরা তাঁদের জোর করে তুলে দেন বলে অভিযোগ ওই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য নারায়ণ মল্লিকের। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের পক্ষে মঙ্গলা দাস এবং পিরু দাসের অভিযোগ, ‘‘আগে যেমন কাজে লাগলেই সরকার নির্ধারিত রোজের মজুরি পেয়েছি, সে রকমই এখন ১৯১ টাকাই দিতে হবে। মাপ অনুযায়ী মজুরি দেওয়ার নিয়ম মানি না। কাজও করব না।” লতিকা বাহাদুর নামে এক শ্রমিকের প্রশ্ন, ‘‘মাপের হিসাবে যে মজুরি দেওয়া হচ্ছে, তা নামমাত্র। এই কাজ কেন করব?”
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে গুণমান এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখতে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। কাজে লাগলেই সহজে মজুরি পাওয়ার রীতিতে রাশ টেনে মাপ অনুযায়ী মজুরি প্রদানে বিশেষ কড়াকড়ি হয়েছে। সর্বোপরি, স্থায়ী সম্পদের হাল-হকিকত জানিয়ে ‘জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম’ প্রয়োগ করে যাবতীয় তথ্য ভৌগোলিক মানচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।