কম: এমনই হাজিরা গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে। ছবি: সুব্রত জানা
যেন অঘোষিত বন্ধ!
দোকানপাট বন্ধ। রাস্তাঘাটে লোকজন নেই। নামমাত্র পড়ুয়া আসায় গ্রামের দু’টি স্কুল ছুটি হয়ে যায়। শুধু অলি-গলিতে পুলিশ।
এক কিশোরীর দেহ উদ্ধারের ঘটনাকে ঘিরে রবিবার দুপুরে উলুবেড়িয়ার রাজাপুরের যে গ্রাম তেতে উঠেছিল, ২৪ ঘণ্টা পরে, সোমবার দুপুরেও সেখানে আতঙ্ক কাটেনি। পুলিশি ধরপাকড়ের ভয় পাচ্ছেন অনেকে। কিশোরীর অপমৃত্যুর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এ দিনও পুলিশ বা রেল পুলিশের কাছে আসেনি। রবিবার পুলিশের উপরে হামলার অভিযোগে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দু’দিন ধরে নিখোঁজ ওই গ্রামের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর দেহ মিলেছিল শনিবার। বাগনান স্টেশনের কাছে রেললাইন থেকে। সহপাঠী তাকে ধর্ষণ করে খুন করেছে, এই অভিযোগকে কেন্দ্র করেই রবিবার দুপুরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে। পথ অবরোধ তুলতে পুলিশ লাঠি চালাতেই তেতে ওঠে এলাকা। গ্রামবাসীদের সঙ্গে শুরু হয় খণ্ডযুদ্ধ। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাল্টা বোমা, ইট এবং অ্যাসিডের বোতল ছোড়া হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। ঘটনায় জখম হন রাজাপুর থানার ওসি অজয় সিংহ-সহ কয়েকজন পুলিশকর্মী এবং গ্রামবাসী। শেষে পুলিশ বাহিনী এবং র্যাফ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
তারপর থেকেই এলাকা পুলিশে মুড়ে ফেলা হয়। সোমবার সকাল থেকে লোকজন খুব বেশি রাস্তায় বের হননি। গ্রামে দু’টি প্রাথমিক স্কুল আছে। একটির প্রধান শিক্ষক চন্দন দেঁড়ে বলেন, ‘‘আতঙ্কে পড়ুয়ারা তেমন আসেনি। স্কুলে এ দিন সরস্বতী পুজোর খাওয়া-দাওয়া এবং বিসর্জন ছিল। দু’টোই বাতিল হয়েছে। পড়ুয়া কম আসায় মিড-ডে মিল বন্ধ রেখে স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।’’ প্রায় একই বক্তব্য অন্য স্কুলটির কর্তৃপক্ষেরও। প্রতিমা অধিকারী নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘রবিবার যে ভাবে বোমা পড়ল, তারপরে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হল, ভাবতে এখনও ভয় লাগছে। পুলিশ যে কখন কাকে ধরে!’’
জেলার (গ্রামীণ) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশিস মৌর্য জানান, সব অভিযুক্তকেই ধরা হবে। পুলিশ টহল চলবে। ধৃত সাত জনকে সোমবার উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁদের সাত দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।