ছবি: মোহন দাস।
জেলা পরিষদ ১৯৮৭ সাল নাগাদ গোঘাটের গড়মান্দারণে ‘গড়মান্দারণ পর্যটনকেন্দ্র’ লেখা সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছিল। পর্যটক টানতে নানান পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছিল। গুটিকয়েক কাজের পরে তা বাস্তবায়িত হয়নি। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় গড়মান্দারণকে যথাযথ ভাবে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি তোলা হল। গোঘাটের বিধায়ক তৃণমূলের মানস মজুমদার পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের কাছে প্রশ্ন তুললেন, ‘‘গড়মান্দারণের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সরকারের কোনও পরিকল্পনা আছে কি না? থাকলে সেই কাজ কবে শুরু হবে?’’ মন্ত্রী লিখিতভাবে উন্নয়নের পরিকল্পনা পাঠাতে বলেছেন বলে বিধায়ক জানান।
ইতিহাস বিজড়িত এই গড়মান্দারণ প্রায় ২০০ একর এলাকাজুড়ে রয়েছে। জঙ্গলে ঘেরা গড়মান্দারণ এখন শুধুই পিকনিক স্পট। অভিযোগ, মদ্যপদের আনাগোনা তো লেগেই আছে। লুটপাট হচ্ছে গাছগাছালি। পুকুরগুলি থেকে মাছ চুরি আগেই হয়ে গিয়েছে। এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি, কামারপুকুর এবং সংলগ্ন গড়মান্দারণকে কেন্দ্র করে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠুক।
বাম আমলে জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে যে সব কাজ হয়েছিল তাও এখন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। কথিত আছে, নবম শতাব্দীর প্রথম দিকে দক্ষিণ রাঢ়ের হিন্দু রাজারা বাংলার সেন বংশের রাজাদের প্রাধান্য এড়িয়ে রাজ্য ও রাজধানী স্থাপনের জন্য মন্দার গাছ শোভিত মান্দারণ গ্রামকে বেছেছিলেন। এরপর ক্রমান্বয়ে ওড়িশা রাজ, পাঠান, মুঘল, আফগানদের হাত ঘুরে ১৭২৭ খৃষ্টাব্দ নাগাদ বাংলার নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ মান্দারন পরগনা সপ্তগ্রাম চাকলার অন্তর্ভুক্ত করে মান্দারণের সদর কার্যালয় হগলির আদিসপ্তগ্রামে নিয়ে যায়। শেষে ১৭৪১ খৃষ্টাব্দ থেকে ১৭৫৩ পর্যন্ত গড়মান্দারণ দুর্গটি মারাঠা বর্গিদের দখলে থাকে। সেই থেকেই দুর্গটি অবহেলিত।