ফাইল চিত্র
নিজের সংসদীয় এলাকায় রেলের জমি থেকে বস্তি উচ্ছেদের নোটিসের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার বিষয়টি তিনি লোকসভায় তুললেন। আর্জি জানালেন, ওই জমি খালি করতে হলে সেখানে বসবাসকারী মানুষদের পুনর্বাসন দেওয়া হোক। রেল নির্বিচারে ব্যক্তিগত জমিও নিয়ে নিতে চাইছে বলেও তিনি অভিযোগ তোলেন।
সোমবার লোকসভায় কল্যাণ বলেন, ‘‘শ্রীরামপুর রেল স্টেশনের কাছে রেলের জমি এবং সংলগ্ন ব্যক্তিগত জমি রয়েছে। সেখানে গরিব মানুষ বসবাস করেন। রেল কর্তৃপক্ষ নিজেদের এবং ব্যক্তিগত জমির সীমানা নির্ধারণ না করেই এই সব মানুষকে উচ্ছেদ করতে চাইছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি বলতে চাই, রেল প্রথমে নিজেদের জমির সীমানা নির্ধারণ করুক, তার পরে যা পদক্ষেপ করার করুক। কিন্তু আমার অনুরোধ, কেউ ১০০ বছরের উপরে রেলের জমিতে বসবাস করলে তাঁদের মাথা গোঁজার জন্য রেল কর্তৃপক্ষের উচিত পুনর্বাসন প্রকল্প ঠিক করা।’’
মঙ্গলবার দিল্লি থেকে ফোনে কল্যাণ বলেন, ‘‘গরিব মানুষের মাথার ছাদ কেড়ে নিলে এই অসময়ে তাঁরা যাবেন কোথায়? রেল কর্তৃপক্ষ মানবিকতার সঙ্গে বিষয়টি দেখুক।’’ এ ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ডানকুনিতে রেলের কারখানা গড়তে সেখানে বসবাসকারী লোকজনকে পুনর্বাসন দেওয়ার উদাহরণ দেন তিনি। কল্যাণের বক্তব্য নিয়ে পূর্ব রেলের আধিকারিকরা কোনও মন্তব্য করেননি।
শ্রীরামপুরে মালগুদাম সংলগ্ন রাইল্যান্ড রোডের ধারে রেলের জমিতে বসতি রয়েছে। মাসখানেক আগে ওই বসতি খালি করার নির্দেশ দেয় রেল। ওই নির্দেশে সেখানকার বাসিন্দারা চিন্তায় পড়েন। রেলের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নামে তৃণমূল। পুলিশ-প্রশাসনের দফতরেও বিষয়টি তাঁদের তরফে জানানো হয়। গত ৩০ অগস্ট রাইল্যান্ড রোডের ধারে দলীয় সভায় উচ্ছেদের নোটিস প্রসঙ্গে রেলের বিরুদ্ধে কার্যত রাজনীতি করার অভিযোগ তোলেন কল্যাণ। পুনর্বাসন না দিয়ে উচ্ছেদের চেষ্টা করা হলে ‘ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়াই’য়ের হুঁশিয়ারি দেন। দাবি করেন, ওই চৌহদ্দিতে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমিও রয়েছে। তাই, ওই জমি যে রেলের, তা তাদের প্রমাণ করতে হবে।
পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের তরফে বরাবরই দাবি করা হয়েছে, যা করা হচ্ছে, সবই আইন মেনে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সম্প্রতি রেলের তরফে ফের একটি নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছে, মালগুদাম সংলগ্ন রেলের জায়গা বরাবর শীঘ্রই পাঁচিল তৈরি করা হবে। এই পরিস্থিতিতে এলাকাবাসী রীতিমতো বিব্রত। স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘‘কী করব বুঝে উঠতে পারছি না। তবে, সাংসদ যে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন এবং লোকসভাতেও বিষয়টি তুলে ধরেছেন, তাতে ভরসা পাচ্ছি। আশা করব, রেল এতটা অমানবিক হবে না। আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই কেড়ে নেবে না।’’