প্রতীকী চিত্র।
টাকা বেরনোর আগে পর্যন্ত প্রক্রিয়া সব ঠিকঠাকই হচ্ছে। গ্রাহকের মোবাইলে মেসেজ বলছে, টাকা তোলা হয়েছে। অথচ, এটিএম থেকে টাকা বেরোচ্ছে না। এমন অভিযোগ পেয়ে উত্তরপাড়ায় একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএমে গিয়ে অনুসন্ধান করে পুলিশ অফিসাররা তাজ্জব! অভিনব পন্থায় ওই এটিএমের টাকা তুলে নিচ্ছে প্রতারক, এমনটাই মনে করছেন তাঁরা।
ব্যাঙ্কের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এর পিছনে দুষ্কৃতীদের চক্র থাকতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের তরফে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। চিপ লাগিয়ে এটা করা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। যে বা যারা এটা করছে, তাদের ধরার চেষ্টা চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, উত্তরপাড়ার কলেজ মোড়ে জিটি রোডের ধারে রক্ষীবিহীন একটি এটিএম থেকে টাকা তুলতে পারছিলেন না গ্রাহকেরা। অথচ, তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উঠে যাচ্ছিল। গ্রাহকদের থেকে বিষয়টি ব্যাঙ্কের আধিকারিকরা জানতে পারেন। অভিযোগ পেয়েই মঙ্গলবার উত্তরপাড়া থানার পুলিশ তদন্তে যায়। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতেই জালিয়াতি ধরা পড়ে।পুলিশ জানায়, ফুটেজে দেখা যায়, নীল জামা এবং হলুদ মাস্ক পরা এক ব্যক্তি এটিএমের সামনের দিকের একটি অংশ খুলে কিছু করছে। পরে অপর এক জন কাউন্টারে ঢুকে সেই অংশ খুলে টাকা বের করছে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, এটিএমের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় টাকা বেরিয়ে আসে। তাঁদের ধারণা, সেখানে দুষ্কৃতীরা একটি চিপ ঢুকিয়ে দিচ্ছিল। টাকা বেরনোর ট্রে-র উপরে অন্য একটি প্লেট রেখে দিচ্ছিল। গ্রাহকরা টাকা তুললেও সেই টাকা কিয়স্ক থেকে না-বেরিয়ে ওই প্লেটের তলায় পড়ে থাকছিল। গ্রাহক তা বুঝতেই পারছিলেন না। টাকা না পেয়ে গ্রাহক বোরিয়ে যাওয়ার পরে জালিয়াত চক্রের লোক মেশিনের সামনে অংশ খুলে সেই টাকা বের করে নিচ্ছিল। এই ভাবে নগদ কয়েক হাজার টাকা তোলা হয়েছে।
তবে দুষ্কৃতীদের ‘অপারেশন’-এর গোটা প্রক্রিয়া এখনও তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকের কাছে পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে, এটিএমের গঠন এবং টাকা বেরনোর পদ্ধতি সম্পর্কে দুষ্কৃতীদের সম্যক জ্ঞান রয়েছে, সে ব্যাপারে তাঁরা এক প্রকার নিশ্চিত। তদন্তকারীদের বক্তব্য, মেশিন থেকে টাকা বেরনোর গোটা পদ্ধতি বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশ কমিশনার জানান, প্রয়োজনে এই বিষয়ের পারদর্শী ইঞ্জিনিয়ারদের সাহায্য নেওয়া হবে।