বদলায়নি পথ। নিজস্ব চিত্র।
এলাকার প্রায় সব জায়গাতেই ইটের নয়তো ঢালাই রাস্তা। কিন্তু কোনও কারণে আজও ইটের রাস্তা থেকে বঞ্চিতই থেকে গিয়েছে শ্যামপুরের খাড়ুবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের খিদিরপুর দক্ষিণপাড়া এলাকা। অন্য সব জায়গায় যখন একের এক রাস্তায় ইট পড়েছে, কোনও গ্রামে কংক্রিটের ঢালাই রাস্তা হয়েছে, তখন দক্ষিণ পাড়ার মানুষ ভেবেছেন এ বার তাঁদের রাস্তা ভাগ্যেও শিকে ছিঁড়বে। না, শিকে আর ছিঁড়ে পড়েনি। আজও শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষায় তাঁদের মাটির কাঁচা রাস্তাই উপায়।
অথচ শ’য়ে শ’য়ে ছাত্র, কয়েক হাজার গ্রামবাসীর যাতায়াতের জন্য ওই রাস্তাই সম্বল বলে স্থানীয় মানুষের দাবি। তাঁদের অভিযোগ, বিধানসভা, লোকসভা, পঞ্চায়েত ভোট সব আসে-যায়। নেতারা তখন এসে প্রতিশ্রুতি ফুলঝুরি ছড়ান। কিন্তু তাঁদের রাস্তা ভাগ্য আর বদলায়নি। এবারও পঞ্চায়েত কঋর্তপক্ষের আশ্বাস পেয়েছেন যে রাস্তা সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। ভোটের জন্যই কাজ হচ্ছে না। ভোট মিটলেই কাজ শুরু হবে।
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খিদিরপুর ও নস্করপুরের মোড় থেকে খিদিরপুর দক্ষিণপাড়া শান্তিরাম প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত কিলেমিটার খানেক মাটির রাস্তাটির বেশিরভাগই এবড়ো- খেবড়ো। ঢালাই তো স্বপ্ন, আজ পর্যন্ত একটা ইটও পড়েনি। অথচ এলাকা রাস্তাটির গুরুত্ব রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়ারা তো বটেই, সাদারণ পথচারীরাও সমস্যায় পড়েন খারাপ রাস্তার কারণে। শীত-গরমে তবু রেহাই, কিন্তু বৃষ্টি হলে বা বর্ষায় দুভোর্গের আর সীমা থাকে না। কর্দমাক্ত রাস্তায় পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনাও তখন রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। বাধ্য হয়ে অনেকে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দেন, পাছে বিপদ ঘটে এই আশঙ্কায়। স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণা রায়চৌধুরী, অদিতি মাইতি, ঊষা মণ্ডলের অভিযোগ প্রশাসনের কাছে বার বার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু শুকনো আশ্বাস ছাড়া মেলেনি কিছু।
তাঁদের আরও অভিযোগ, বতর্মান শাসক দল প্রচুর উন্নয়নের কথা বলে। দীর্ঘদিন ধরে এখানে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। কিন্তু তারাও রাস্তা নিয়ে উদ্যোগী হয়নি। তৃণমূলের উপপ্রধান শ্যামল সামন্ত বলেন, ‘‘আমাদের পঞ্চায়েত এলাকায় শ’খানেক রাস্তা ঢালাই করেছি। এই রাস্তারও সংস্কার করা হবে। মাষ্টার প্ল্যানের মধ্যে তা ধরা আছে।’’ যদিও ভুক্তভোগী গ্রামবাসী বলছেন, ‘না আঁচালে বিশ্বাস নেই’।