ডেঙ্গি নিয়ে তড়িঘড়ি বৈঠক হাওড়ায়

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া জেলায় ডেঙ্গিতে এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে তিন জনই ডোমজুড়ের। গত বারেও এই ব্লকে অনেকগুলি ডেঙ্গি আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছিল। এ বার প্রথম থেকেই ডোমজুড়কে নিয়ে বিশেষ সতর্কতা নিয়েছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৪৯
Share:

আলোচনা: সাঁকরাইল ব্লক অফিসে জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী।

ডেঙ্গিতে ইতিমধ্যেই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে ডোমজুড় ব্লকে। কিন্তু সেই ব্লকের কয়েকটি পঞ্চায়েতে মিলছে না পর্যাপ্ত ব্লিচিং এবং প্রয়োজনীয় ট্যাবলেট। জেলাশাসকের সামনে এমনই অভিযোগ করলেন ডোমজুড় ব্লকের কয়েকটি পঞ্চায়েতের প্রধান। যদিও ডোমজুড় ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, সব পঞ্চায়েতেই পর্যাপ্ত ব্লিচিং এবং ট্যাবলেট পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া জেলায় ডেঙ্গিতে এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে তিন জনই ডোমজুড়ের। গত বারেও এই ব্লকে অনেকগুলি ডেঙ্গি আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছিল। এ বার প্রথম থেকেই ডোমজুড়কে নিয়ে বিশেষ সতর্কতা নিয়েছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তার পরেও মৃত্যু এড়ানো যায়নি। সাঁকরাইলে এখনও পর্যন্ত ৩১ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। দেরিতে হলেও এ বার নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ডোমজুড় ও সাঁকরাইল ব্লকে গিয়ে ডেঙ্গি নিয়ে বৈঠক করেন হাওড়ার জেলাশাসক চৈতালী চক্রবর্তী ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস। ছিলেন ডোমজুড়ের বিডিও রাজা ভৌমিক, সাঁকরাইলের বিডিও সন্দীপ মিশ্র এবং পঞ্চায়েত স্তরের জনপ্রতিনিধিরা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লিচিং ছড়ানো এবং সচেতনতামূলক প্রচারের জন্য বুথ পিছু আড়াই হাজার টাকা করে
দেওয়া হবে।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ডোমজুড়ের বৈঠকে এক পঞ্চায়েত প্রধান পর্যাপ্ত ব্লিচিং না পাওয়ার অভিযোগ করেন। জেলাশাসক জানান, এই সমস্যা মেটানো হবে। ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর চট্টোপাধ্যায় এবং স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ দীপক মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ইতিমধ্যেই আমরা প্রতিটি পঞ্চায়েতে পর্যাপ্ত ব্লিচিং পাঠিয়েছি। ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে লিফলেট বিলি হয়েছে। জেলাশাসকের নির্দেশমতো শুক্রবার থেকে প্রশাসনের সব দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা হবে।’’

ডোমজুড়ের মতো সাঁকরাইলের বৈঠকেও ব্লকের প্রতিটি বুথে ব্লিচিং ছড়ানো, রোগীদের রক্ত পরীক্ষা করানো, এলাকায় জল জমতে না দেওয়ার উপরে জোর দেওয়া হয়। আশা কর্মী, স্বাস্থ্য কর্মী ছাড়াও স্থানীয় ক্লাব ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি জয়ন্ত ঘোষ ও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তপন পাল জানান, বৃহস্পতিবার থেকে প্রতিটি বুথে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় ক্লাবগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

শুধু ডোমজুড় ও সাঁকরাইল নয়, গ্রামীণ হাওড়ার প্রায় সর্বত্রই জ্বরের প্রকোপ দেখা গিয়েছে। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল থেকে শুরু করে সব গ্রামীণ হাসপাতাল এবং ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে জ্বর নিয়ে প্রচুর রোগী ভর্তি রয়েছেন। জেলার কয়েকটি ব্লকের কর্তাদের দাবি, জেলা প্রশাসনকে ডোমজুড় ও সাঁকরাইলের মতো তাদের এলাকায় এসেও বৈঠক করতে হবে। উলুবেড়িয়া ১ ব্লকের চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় ব্লিচিং পাউডার না ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। মহিষরেখা এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই গ্রামের জন্য মাত্র এক কেজি ব্লিচিং পাউডার বরাদ্দ হয়েছে। তা-ও আবার ছড়ানো হয়নি। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান সুমিত্রা রং বলেন, ‘‘সর্বত্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’

জেলাশাসক জানান, জেলার প্রতিটি ব্লকের বিডিও এবং ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ও পঞ্চায়েতগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। গ্রামবাসীদের কোনও অভিযোগ থাকলে তাঁরা বিডিওদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement