প্রতীকী ছবি।
কোভিড সংক্রমণের হার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে হাওড়ায়। কিন্তু বাড়ছে মৃত্যুর হার। যাঁরা মারা যাচ্ছেন, দেখা যাচ্ছে তাঁদের বেশির ভাগেরই কো-মর্বিডিটি ছিল। চিকিৎসক মহলের দাবি, বয়স্ক মানুষদের মধ্যে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করানোর প্রবণতা বাড়ায় মৃত্যুর হার কমছে না। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতরও। সেই কারণে ৬০ বছরের বেশি বয়সিরা যাতে সামান্য অসুস্থ হলেও অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন এবং প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি হন, সেই আবেদন জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, কয়েক সপ্তাহ আগেও হাওড়া শহরে প্রতিদিন ৩৫০-৪০০ জন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছিলেন। সেই সংখ্যা গত এক-দু’সপ্তাহে একশো বা তারও অনেক নীচে নেমে এসেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, গত শনিবার হাওড়ায় মাত্র ১৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন ১৯৩ জন। কিন্তু এক দিনে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। সার্বিক ভাবে মৃতের সংখ্যা ৪১২।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘হাওড়ায় সংক্রমণের হার কমেছে পাঁচ শতাংশের বেশি। কিন্তু মৃত্যুর হার কমেনি। এখন মৃত্যুর হার ২.৮। এটাই আমাদের ভাবাচ্ছে। এই হার ১.৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে।’’ দফতরের কর্তাদের মতে, কোভিড ধরা পড়লে অধিকাংশ লোক এখন বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করাচ্ছেন। কিন্তু অতিরিক্ত সংক্রমিত (লেভেল ফোর) ব্যক্তিরা যখন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, তখন বিভিন্ন নার্সিংহোম ঘুরে সরকার অনুমোদিত কোনও কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও তাঁদের বাঁচানো যাচ্ছে না। এমন রোগীর মধ্যে ৬০ বছরের বেশি বয়সি লোকজনের মৃত্যু হচ্ছে কো-মর্বিডিটির কারণে। যার জন্য গোলাবাড়ি এবং উলুবেড়িয়ার দু’টি বেসরকারি কোভিড হাসপাতালে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ওই কর্তা বলেন, ‘‘বয়স্ক মানুষেরা কোভিডে আক্রান্ত হলে তাঁদের বাড়িতে রাখা ঠিক নয়। বিশেষত যাঁদের সুগার-সহ অন্য অসুখ রয়েছে। কিন্তু অনেকেই সেই কথা শুনতে চাইছেন না। বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করাতে চাইছেন। এতে বিপদ বাড়ছে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে এখন হাওড়া শহরের আটটি হাসপাতালে কোভিডের চিকিৎসা হচ্ছে। আইসিইউ-ও রয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যায়। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কোনও সমস্যা নেই। তাই তাদের পরামর্শ, বয়স্ক মানুষেরা ঠিক সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে মৃত্যুহারে অনেকটাই রাশ টানা যাবে।