মারের ভয়ে বন্ধ হোর্ডিং-ব্যানার খোলা

ঘটনাটি ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়ের।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৯ ০১:২৫
Share:

হাওড়ায় একটি বাতিস্তম্ভে টাঙানো রয়েছে রাজনৈতিক ব্যানার। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

পাঁচ বছর আগে আদর্শ নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন রুখতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন জেলা নির্বাচন কমিশনের কয়েক জন অফিসার এবং কর্মী। শাসক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, রাজ্য সরকারের একটি দফতরের কাজে বাধা দেওয়ার। আরও অভিযোগ, খবর দেওয়া হলেও দেরিতে আসে পুলিশ। ফলে নির্দিষ্ট সেক্টরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচনী অফিসার না আসা পর্যন্ত কাজে নামতে চাইছেন না ওই দফতরের কর্মীরা। অভিযোগ, তারই সুযোগে হাওড়ার অলিগলিতে চলছে বেমালুম আইন ভাঙার খেলা।

Advertisement

ঘটনাটি ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়ের। রাস্তায় বাতিস্তম্ভে লাগানো শাসক দলের প্রচার সংক্রান্ত ব্যানার খুলতে গিয়ে মধ্য হাওড়ার কাসুন্দিয়া শিবতলায় আক্রান্ত হয়েছিলেন জেলা নির্বাচন দফতরের অফিসার এবং কর্মীরা। অভিযোগ, তাঁদের কাজে বাঁধা দেওয়া হয় এবং চরম হেনস্থা করা হয়। এমনকি সেই ছবি তুলতে গেলে সংবাদমাধ্যমও আক্রান্ত হয়। অভিযোগ ওঠে স্থানীয় শিবপুর থানায় খবর দিলেও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় দেরিতে। ওই ঘটনার পরে কাজ বন্ধ করে দেন মডেল কোড অব কন্ডাক্ট (এমসিসি) দফতরের আতঙ্কিত কর্মীরা। পরে পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস পেয়ে কাজ শুরু করেন তাঁরা। সেই ঘটনার সূত্র ধরে এমসিসি দফতরের এক কর্মী বলছেন, ‘‘সেক্টর অফিসার আসার পরেই আমাদের কাজে নামতে সুবিধা হবে।’’

ফলে আদর্শ নির্বাচনীবিধি লাগু হওয়ার তিন সপ্তাহ পরেও এ বার হাওড়া সদর লোকসভা কেন্দ্রের অলিগলিতে রয়ে গিয়েছে সরকারি সম্পত্তিতে লাগানো বিভিন্ন দলের ব্যানার বা ফেস্টুন। তবে মূল রাস্তা থেকে সে সব সরানো হয়েছে। হাওড়া জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ১,৭৮৯টি পোস্টার, ব্যানার এবং হোর্ডিং খোলা হয়েছে। প্রায় এক হাজার এমন পোস্টার ব্যানার সদর লোকসভা কেন্দ্রের অলিগলিতে রয়ে গিয়েছে বলে খবর। ইতিমধ্যে সি-ভিজিল অ্যাপের মাধ্যমে জেলা নির্বাচন দফতরে ৮৫টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার ২৪টি অভিযোগেরই প্রমাণ মেলেনি। ৬১টি অভিযোগের অবশ্য সত্যতা মিলেছে। যার অধিকাংশই সরকারি সম্পত্তিতে রাজনৈতিক দলের প্রচার ব্যানার ও ফেস্টুন সংক্রান্ত অভিযোগ বলে জেলা নির্বাচন দফতরের খবর।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

হাওড়ার এমসিসি-র দায়িত্বে থাকা এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘‘ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তাই এ বার এমসিসি কর্মীদের জন্য নিরাপত্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্থির হয়েছে নির্দিষ্ট সেক্টরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচনী অফিসারেরা আসার পরেই আদর্শ নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে হাওড়ার অলিগলির সরকারি সম্পত্তিতে লাগানো রাজনৈতিক দলের ব্যানার বা ফেস্টুন খোলা হবে। এ জন্য পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা থাকবে। তবে মূল রাস্তা থেকে রাজনৈতিক দলের পোস্টার, ব্যানার, হোর্ডিং সরানো হয়েছে।’’

জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত অ্যাপের মাধ্যমে জমা পড়া অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থাও হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলির কাছেও আবেদন রাখা হয়েছে যেন এই সব ব্যানার হোর্ডিং খুলতে এমসিসি কর্মীদের তাঁরা সাহায্য করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement