ঘরে জল, বিছানাতেই সংসার উলুবেড়িয়ায়

গঙ্গারামপুর, নিমদিঘি, যদুরবেড়িয়া, ডোমপাড়া প্রভৃতি এলাকায় জল-যন্ত্রণার ছবিটা প্রায় একই রকম। রাস্তাঘাট ডুবে গিয়েছে। এলাকায় ঘুরে দেখা গিয়েছে, নিকাশি নালাগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়াতেই জমা জল বেরোতে পারছে না।

Advertisement

নুরুল আবসার ও সুব্রত জানা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৪৩
Share:

ভোগান্তি: উলুবেড়িয়ার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের হাল এমনই। নিজস্ব চিত্র

বৃষ্টি থেমেছে। দুর্ভোগ নয়। শুক্রবার থেকে তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে উলুবেড়িয়া পুরসভার বহু এলাকায় জল জমে গিয়েছে। রবিবার বৃষ্টির প্রকোপ কমলেও জলমগ্ন এলাকাগুলির মানুষদের ভোগান্তি কমেনি। বাড়িতে জল ঢোকায় কেউ জিনিসপত্র নিয়ে বিছানাতেই সংসার পেতেছেন, কেউ পড়শির বাড়িতে গিয়ে উঠেছেন।

Advertisement

গঙ্গারামপুর, নিমদিঘি, যদুরবেড়িয়া, ডোমপাড়া প্রভৃতি এলাকায় জল-যন্ত্রণার ছবিটা প্রায় একই রকম। রাস্তাঘাট ডুবে গিয়েছে। এলাকায় ঘুরে দেখা গিয়েছে, নিকাশি নালাগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়াতেই জমা জল বেরোতে পারছে না। এই সব এলাকায় নিকাশি নালাগুলির বেশির ভাগই খোলা মুখ। তাতে যথেচ্ছ পড়েছে বর্জ্য। নিমদিঘিতে মাছের বাজারে যে নিকাশি খালটি রয়েছে, সেটি বাজারের প্লাস্টিকের ব্যাগ পড়ে বুজে গিয়েছে। অন্য নালাগুলিরও একই হাল।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিকাশি নালাগুলি নিয়মিত সাফ না-করার ফলেই পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়ে পড়েছে। যদুরবেড়িয়ার বাসিন্দা প্রণব মুখোপাধ্যায় দু’দিন ধরে জলবন্দি হয়ে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘কৃষি খামারের জমিতে কিসান মান্ডি হওয়ার সময়ে পাঁচিল দিয়ে পুরো জমি ঘিরে ফেলা হয়। সেই সময়ে চাপা পড়ে নিকাশি নালা। তার ফলেই এলাকার জল বেরোতে পারছে না।’’ নতুন নিকাশি নালা তৈরির দাবি তুলেছেন প্রণব।

Advertisement

পানপুর মোড়ের বাসিন্দা শেখ ইসলামের পরিবারও জলবন্দি অবস্থায় রয়েছে। ইসলাম বলেন, ‘‘মুম্বই রোড সম্প্রসারিত হওয়ার সময়ে নয়ানজুলি বুজিয়ে দেওয়া হয়। তার ফলেই এলাকার জল বেরোতে পারছে না।’’ জাতীয় সড়ক সংস্থার কর্তারা জানান, মুম্বই রোডের পাশে নিকাশি নালা করে দেওয়া হয়েছে। যদিও এই ব্যবস্থা যথেষ্ট নয় বলে দাবি করেছেন নিমদিঘি থেকে নির্বাচিত পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রবিউল হক মোল্লা। তিনি বলেন, ‘‘নরেন্দ্র সিনেমা থেকে নিমদিঘির মোড় পর্যন্ত মুম্বই রোড বরাবর একটি নিকাশি নালা করেছে জাতীয় সড়ক সংস্থা। কিন্তু তার দু’টি মুখ বন্ধ। ফলে, জল বেরোতে পারছে না। নালা উপচে এলাকা ডোবাচ্ছে।’’

কিন্তু প্লাস্টিকে লাগাম কই?

প্লাস্টিক পড়ে নালাগুলি বুজে যাওয়া নিয়ে রবিউল বলেন, ‘‘আমরা বর্ষার অনেক আগে থেকে নালা সাফ করেছি। পুরসভার কর্মীরা রবিবার সকাল থেকে জমা জল বের করতে নালাগুলি সাফ করতে নেমে পড়েন।’’ পুরসভার চেয়ারম্যান অভয় দাস বলেন, ‘‘আমরা পুরসভার নিজস্ব নালাগুলির খোলা মুখ ঢালাই করে দিচ্ছি, যাতে কেউ বর্জ্য ফেলতে না পারেন।’’ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে তাঁরা প্রচারে নামবেন বলেও অভয়বাবু জানান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement