অগণিত: বৈদ্যবাটী-শেওড়াফুলি নিয়ন্ত্রিত বাজারে জনস্রোত।ছবি: কেদারনাথ ঘোষ
ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য শেওড়াফুলি স্টেশন চত্বর থেকে আনাজের পাইকারি বাজার বৈদ্যবাটীর শাসমলপাড়ায় দিল্লি রোড লাগোয়া কৃষক বাজারে সরিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। তার উপরে নতুন জায়গায় পরিকাঠামো নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে।
রাজ্যের অন্যতম বড় আনাজের হাট শেওড়াফুলি। দূরদূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে আনাজ কিনতে আসেন। শুক্রবার থেকে এই হাট বসছে শেওড়াফুলি-বৈদ্যবাটী নিয়ন্ত্রিত বাজার চত্বরের কৃষক বাজারে। রবিবার ভোর থেকেই হাটে গিজগিজে ভিড় ছিল। শারীরিক দূরত্বের বালাই ছিল না। ক্রেতাদের অভিযোগ, পটল, ঝিঙে, ডাঁটা, কাঁচালঙ্কা-সহ প্রায় প্রতিটা আনাজের দাম ছিল অনেক বেশি। চড়া দাম নিয়ে অনেকেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
শেওড়াফুলি কাঁচা আনাজ বাজার সমিতির সম্পাদক সুকল্যাণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ধরনের বড় বাজার সরালেই তো হল না, পরিকাঠামোও তো দেখতে হবে! নতুন জায়গায় কোনও পরিকাঠামোই নেই। প্রায় এক হাজার মুটে বা কর্মচারী আছেন কোথায় থাকবেন? হাটে অনেক টাকার লেনদেন হয়। অথচ এখানে কোনও ব্যাঙ্ক নেই। পুলিশি নিরাপত্তাও নেই। ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা কোথায়?’’ কারবারিদের দাবি, পরিকাঠামোর অভাবে অনেকে নতুন জায়গায় বসতে চাইছেন না। আনাজ আসছে কম। বাড়ছে দাম।
বৈদ্যবাটীর পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘এই নিয়ে কোনও অভিযোগ পাইনি। হুগলির বহু বাজার বন্ধ থাকায় ভিড় বেশি হচ্ছে। লকডাউন বিধি এবং চড়া দামের বিষয়টি প্রশাসনকে জানাচ্ছি।’’
ঘোষণা অনুযায়ী উত্তরপাড়া শহরের ৯টি বাজার রবিবার বন্ধ হল। পাড়ায় পাড়ায় ভ্যানে করে আনাজ এবং মাছ বিক্রিও শুরু হয়েছে। তবে শহরবাসীর ক্ষোভ, অনেক পাড়ায় ভ্যান পৌঁছয়নি। আবার ভদ্রকালী ক্যাম্প এলাকায় একই জায়গায় অনেক আনাজ বিক্রেতা ভিড় করেছেন। সেখানে ক্রেতারা লাইন দিয়েছেন। কিক্ষু ক্ষেত্রে সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীরা চড়া দাম হেঁকেছেন বলেও অভিযোগ। পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘এই ব্যবস্থা সবে শুরু হল। যে সব সমস্যা হচ্ছে, মেটানোর চেষ্টা করছি।’’ ডানকুনি পুর-এলাকাতেও এ দিন থেকে তিনটি বাজার বন্ধ হয়েছে। পুরকর্তারা জানান, শহরের ২১টি ওয়ার্ডে ভ্যানে আনাজ এবং মাছ পাঠানো হচ্ছে।
শ্রীরামপুরে গত কয়েক দিন ধরে ভ্যানে করে আনাজ এবং মাছ নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরছেন বিক্রেতারা। প্রশাসনের তরফে তাঁদের কার্ড দেওয়া হয়েছে। এ দিন অনেকেই সেই কার্ড ঝুলিয়ে মাছ-আনাজ বিক্রি করেন। রাস্তার ধারে বেচাকেনা বন্ধ করতে পুলিশ টহল দিয়েছে। তা সত্বেও কিছু মানুষের রাস্তায় বেরনোর প্রবণতা বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ।
বৈদ্যবাটী শহরে আজ, সোমবার থেকে সমস্ত বাজার বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুরসভার তরফে রবিবার মাইকে ওই ঘোষণা করা হয়। পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, এখানেও ভ্যানে করে পাড়ায় পাড়ায় আনাজ বিক্রি করা হবে। কোন্নগর পুরসভার কর্তারা জানান, আজ, সোমবার প্রশাসনিক বৈঠকে এই শহরে বাজার বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।