Coronavirus Lockdown

লকডাউন মানল হাওড়া, বাস কমে ভোগান্তিতে ট্রেনযাত্রীরা

এ দিন সকালে মধ্য হাওড়ার ঘিঞ্জি এলাকাগুলি যেমন নেতাজি সুভাষ রোড, মল্লিকফটক, ফাঁসিতলা মোড়, সালকিয়া চৌরাস্তা, বেলগাছিয়া মোড়, চ্যার্টাজিপাড়া ছিল সুনসান। রাস্তাঘাটে লোকজন প্রায় দেখা যায়নি। বন্ধ ছিল সব দোকান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ০৩:১২
Share:

হাওড়ার মালিপাঁচঘরায় পুলিশের নির্দেশে ঘরের পথে চালক এবং সওয়ারি। বৃহস্পতিবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

সপ্তাহের প্রথম লকডাউনের দিন যখন বিধি মানার ক্ষেত্রে হাওড়ায় প্রশাসন কড়া, তখনই তার বিপরীত চিত্র দেখা গেল হাওড়া স্টেশন চত্বরে। বাস ধরার হুড়োহুড়িতে শিকেয় উঠল দূরত্ব-বিধি। এমনকি জিনিস নিয়ে উঠতে না-পেরে জানলা দিয়েও বাসে উঠলেন ভিন্ রাজ্য থেকে আসা যাত্রীরা!

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরে ওড়িশা থেকে আসা একটি ট্রেনে প্রায় ২৫০ জন উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু হাওড়া স্টেশন চত্বরে সব দূরপাল্লার বাসই ছিল দক্ষিণবঙ্গের জন্য। পরে তিনটি বাস উত্তরবঙ্গের জন্য চিহ্নিত করা হলে তাতে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায় যাত্রীদের মধ্যে। অভিযোগ, স্টেশনে নেমে তাঁরা কোনও বাস পাননি। বৃষ্টির মধ্যেই ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করতে হয়। হাওড়া সিটি পুলিশ জানিয়েছে, ওই ট্রেনে উত্তরবঙ্গের এত যাত্রী থাকবেন তা বোঝা যায়নি। দ্রুত তিনটি এবং পরে আরও কয়েকটি বাসের ব্যবস্থা করা হয়।

এ ছাড়া এ দিন হাওড়া শহরের সিংহভাগ মানুষ ঘরেই থেকেছেন। করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লেও বহু বাসিন্দাই সতর্ক হচ্ছিলেন না। পুলিশ সূত্রের খবর, কন্টেনমেন্ট জ়োন চিহ্নিত করে লকডাউনের নির্দেশ জারি করেও অকারণে বেরোনো ঠেকানো যায়নি। ভিড় উপচে পড়ছিল রাস্তায়, বাজারে। কিন্তু সপ্তাহে দু’দিন করে রাজ্য জুড়ে সার্বিক লকডাউনের প্রথম দিন পাল্টে গেল ছবিটা। বন্ধ থাকল বাজার-দোকান। পুলিশি সক্রিয়তায় আগের থেকে কড়া লকডাউন দেখল হাওড়া শহর।

Advertisement

এ দিন সকালে মধ্য হাওড়ার ঘিঞ্জি এলাকাগুলি যেমন নেতাজি সুভাষ রোড, মল্লিকফটক, ফাঁসিতলা মোড়, সালকিয়া চৌরাস্তা, বেলগাছিয়া মোড়, চ্যার্টাজিপাড়া ছিল সুনসান। রাস্তাঘাটে লোকজন প্রায় দেখা যায়নি। বন্ধ ছিল সব দোকান। প্রতিটি রাস্তার মুখে ব্যারিকেড এবং পুলিশি পাহারা থাকায় কেউ গাড়ি বা মোটরবাইকে বেরোলে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। উপযুক্ত কারণ না দিতে পারায় বাড়ির পথও দেখিয়েছে পুলিশ।

এ দিন কিছু এলাকায় চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন, হাসপাতালের কাগজ দেখিয়ে রাস্তায় বেরোনোর প্রবণতা দেখা যায়। বাজার এলাকা বলে পরিচিত মল্লিকফটক মোড়ের কাছে পি কে ব্যানার্জি রোড কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে ঘোষিত হওয়ায় গত সাত দিন ধরেই গার্ড রেল দিয়ে ঘেরা। এ দিন জি টি রোডও ঘিরে দেয় পুলিশ। সকাল ১০টা নাগাদ দেখা গিয়েছে, পি কে ব্যানার্জি রোড ও জি টি রোড দিয়ে মাঝেমাঝেই বাসিন্দারা এসে বেরোনোর অনুমতি চাইছেন পুলিশের কাছে। অধিকাংশের হাতেই প্রেসক্রিপশন বা হাসপাতালের কাগজ। কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘সকাল থেকেই ওষুধ কেনার দরকার বেড়ে গিয়েছে। তাই কাগজপত্র পরীক্ষা করে তবেই বেরোনোর অনুমতি দিচ্ছি।’’ বেলার দিকে কয়েকটি রাস্তায় বাইকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় পুলিশ কেস দিতে থাকে। এর পরেই সেই সংখ্যা কমে যায়।

পুলিশ সূত্রের খবর, প্রয়োজনে রাস্তায় বেরোনো মানুষদের মাস্ক পরতে দেখা গেলেও টিকিয়াপাড়া, নর্থ ওয়েস্ট বাইপাস, নেতাজি সুভাষ রোডের আশপাশে অনেকেই মাস্ক পরেননি। নর্থ ওয়েস্ট বাইপাসের ধারের বাসিন্দাদের অনেকে মাস্ক ছাড়া ঘুরছিলেন, তবে পুলিশের ভ্যান দেখলেই সরে যান তাঁরা।

হাওড়ার এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘সকাল থেকে ২৫টি জায়গায় নাকা তল্লাশি হয়েছে। এ দিন পথে নেমেছিলেন। লকডাউন ভালভাবেই হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement