তাঁরা দোকান খোলা রাখবেন না বন্ধ— এ নিয়ে ক’দিন ধরেই বিভ্রান্ত ছিলেন হাওড়ার মদ ব্যবসায়ীরা। কেউ দোকান খুলে রাখছিলেন। কেউ বন্ধ রেখেছিলেন। শনিবার সেই বিভ্রান্তি কাটল।
এ দিন এক বৈঠকে জেলার মদ ব্যবসায়ীদের ডেকে আবগারি দফতরের কর্তারা জানিয়ে দেন, মুম্বই রোড, বিভিন্ন রাজ্য সড়ক ও সার্ভিস রোডের ধারের সব মদের দোকান বন্ধ রাখতে হবে। ওই সব সড়কের ৫০০ মিটারের বাইরে তাঁদের নতুন জায়গা দেখতে হবে। আগামী মঙ্গলবার দুপুর ১২টার মধ্যে বিকল্প জমির বিস্তারিত বিবরণ আবগারি দফতরে জমা দিতে হবে। সেই বিবরণের মধ্যে থাকতে হবে— কেনা জমি হলে তার দলিল, ভাড়ার জমি হলে জমির মালিকের সঙ্গে মদের দোকানদারের চুক্তিপত্র ও মদের দোকানের জন্য জমি-মালিকের ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতো ১ এপ্রিল থেকে জেলায় জাতীয়, রাজ্য সড়ক ও সার্ভিস রোডের ধারে থাকা ১৩১টি মদের দোকান বন্ধ করে দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। দুদিন পরেই রাজ্য সড়কের কিছু অংশকে আর্টিলারি রোড ঘোষণা করে ২৭টি দোকান ফের খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকার। বাকি দোকানগুলির ক্ষেত্রে কোনও নির্দেশ দেওয়া না -হলেও সেগুলিও খুলে যায়। বিক্রেতারা জানান, আবগারি দফতর থেকে প্রথমে তাঁদের ফোন করে দোকান বন্ধ করতে বলা হয়েছিল। পরে ফোন করেই দোকান খুলতেও বলা হয়।
শুক্রবার অবশ্য রাজ্যের আবগারি সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক বা সার্ভিস রোড থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে কোনও মদের দোকান খোলা যাবে না। এ ছাড়া পঞ্চায়েত ও পুর এলাকায় যেখানে জনসংখ্যা ২০ হাজারের নীচে, সেখানে সড়ক থেকে মদের দোকানের দূরত্ব হতে হবে নিদেনপক্ষে ২২০ মিটার। শনিবার বৈঠকে আবগারি দফতরের অফিসারেরা ওই বিজ্ঞপ্তির কপি মদ ব্যবসায়ীদের হাতে ধরিয়ে দেন।
কিন্তু তিন দিনে নতুন নির্দেশ কী ভাবে কার্যকর করবেন, তা নিয়ে আতান্তরে মদ ব্যবসায়ীরা। এ দিন বৈঠকে ডাকা হয়েছিল আবগারি দফতরের আমতা, আন্দুল সার্কেলের জনাকুড়ি মদ ব্যবসায়ীকে। তাঁদের ক্ষোভ, এত অল্প দিনে নতুন জায়গা পাওয়া মুশকিল। আর পেলেও সব শর্ত পূরণ কতটা সম্ভব, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। আবগারি দফতর বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও এ দিনও উলুবেড়িয়া-সহ বেশ কিছু এলাকায় মুম্বই রোড, বিভিন্ন রাজ্য সড়কের ধারে মদের দোকান খোলা ছিল। দফতরের অফিসারেরা জানান, শীঘ্রই সব ক’টি সার্কেলে নতুন নির্দেশের কথা জানিয়ে দেওয়া হবে।