দুর্ঘটনাগ্রস্ত একটি বাস। ফাইল চিত্র
হাওড়া সেতুতে দুর্ঘটনায় দু’টির বেশি বাস জড়িত বলেই মনে করছে লালবাজার।
গত ২৩ নভেম্বর দুপুরে হাওড়া সেতুতে বেপরোয়া গতির একটি ৭৩ নম্বর ও একটি ৪১ নম্বর রুটের বাসের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই দুর্ঘটনায় এক বাসযাত্রীর মৃত্যু হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করার পরে কলকাতা পুলিশ মনে করছে, ওই দু’টি বাস ছাড়া আরও কোনও বেসরকারি বাস দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল। হাওড়া সেতুর বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ছবি খতিয়ে দেখেই এমন ধারণা তৈরি হয়েছে পুলিশের।
এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘ওই সব বাস চিহ্নিত করে সেগুলির চালক এবং কন্ডাক্টরের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হলেই রহস্যের কিনারা হবে।’’ হাওড়া সেতুর ওই দুর্ঘটনায় হাওড়াগামী ৪১ নম্বর রুটের বাসটিতে ছিলেন শিবপুরের বাসিন্দা মনোজকুমার জৈন। তাঁকে ঘটনাস্থল থেকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে তিনি মারা যান। আহতদের সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন সময়েই জখম হন ৭৩ নম্বর রুটের বাসের চালক পালিয়ে যায়। পরে অবশ্য সে ধরা পড়ে।
তদন্তকারীরা জানান, প্রথমে ঘটনাস্থল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় হাওড়া-দাশনগর রুটের ৭৩ নম্বর বাসটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। সেই সময়ে ৪১ নম্বর বাসটি পালিয়ে যায়। পরে সেটিকে হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। ওই বাসের পলাতক চালককেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
লালবাজারের বক্তব্য, এর পরেই ওই দুর্ঘটনা কী ভাবে হয়েছে তা নিয়ে রহস্য তৈরি হয়। কারণ মৃত ওই যাত্রী যে বাসে ছিলেন, সেটির তেমন ক্ষতি না হলেও জখম অবস্থায় তাঁকে হাওড়া সেতু থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। তাঁর শরীরের আঘাত দেখে তদন্তকারীদের অনুমান কোনও বাস তাঁকে চাপা দিয়েছিল। তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। এর পরেই ফের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। সেখানেই হাওড়াগামী একটি বাসের উপস্থিতির প্রমাণ পান তদন্তকারীরা। প্রাথমিক ভাবে লালবাজারের কর্তাদের অনুমান, বেপরোয়া গতির ৭৩ নম্বর এবং ৪১ নম্বর রুটের দু’টি বেসরকারি বাসের মধ্যে মুখোমুখি সংর্ঘষের অভিঘাতে মনোজকুমার জৈন নামে ওই যাত্রী রাস্তায় পড়ে যান। পরে পিছন থেকে রেষারেষিতে থাকা অন্য একটি বেসরকারি বাস তাঁকে চাপা দেয়।
ফলে পুলিশ চাইছে অপর একটি বাসের নাগাল পেতে। সেই বাসটি ধরতে পারলেই দুর্ঘটনার রহস্যের সমাধান হবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।