Labourer

ফের শ্রমিকের মৃত্যুতে কাঠগড়ায় বন্ধ চটকলই

‘সরকারি নিয়মের গেরো’য় ইএসআই-এর সুবিধা পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। ফলে উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে একের পর এক শ্রমিকের মৃত্যু হচ্ছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোন্দলপাড়া শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:০৭
Share:

মর্মাহত: শোকের ছায়া চৌধুরী পরিবারে। নিজস্ব চিত্র

প্রায় দু’বছর ধরে বন্ধ চন্দননগরের গোন্দলপাড়া চটকল। সেই কারণে ‘সরকারি নিয়মের গেরো’য় ইএসআই-এর সুবিধা পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। ফলে উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে একের পর এক শ্রমিকের মৃত্যু হচ্ছে বলে অভিযোগ। সেই তালিকায় নবতম সংযোজন উত্তম চৌধুরী। বছর পঞ্চান্নর ওই প্রৌঢ় মঙ্গলবার দুপুরে বাড়িতেই মারা যান।

Advertisement

তাঁর পরিবারের লোকজনের দাবি, তিনি অর্শ রোগে ভুগছিলেন। ঠিকমতো চিকিৎসা হচ্ছিল না। তার উপরে মিল বন্ধের পর থেকে উপার্জন কমে যাওয়ায় চিন্তায় ছিলেন। এই সব কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

বাড়ির লোকেরা জানান, উত্তম ওই চটকলের পাট বিভাগের শ্রমিক ছিলেন। স্থানীয় টিনবাজারে দাদার সঙ্গে থাকতেন। মিল বন্ধের পর থেকে ছোটখাট কাজ করতেন। নিয়মের যাঁতাকলে ভদ্রেশ্বরের গৌরহাটী ইএসআই হাসপাতালে চিকিৎসা মেলেনি। কিছু দিন চন্দননগর হাসপাতালে চিকিৎসা করান। উত্তমের ভাইপো অভিষেক চৌধুরী বলেন, ‘‘মিল বন্ধের জন্য কাকা সব সময় দুশ্চিন্তা করতেন। মাস খানেক আগে ঠাকুমা মারা যান। তার পরে অবসাদ আরও বাড়ে। কাকার সঞ্চয়ও শেষ হয়ে গিয়েছিল। হাসপাতালেও যেতে চাইতেন না। এই সব কারণেই এত তাড়াতাড়ি কাকাকে চলে যেতে হল।’’ অভিষেকের বাবা অশোক চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা ইএসআই হাসপাতালে গিয়ে অভ্যস্ত। মিল বন্ধ তো শ্রমিকের দোষে হয়নি। ইএসআই হাসপাতালে সরকার আমাদের চিকিৎসাটা চালু রাখুক।’’

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার তেজনারায়ণ যাদব নামে এক শ্রমিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। একের পর এক শ্রমিকের মৃত্যুতে শ্রমিক মহল্লায় বিষাদের ছায়া। শ্রমিকদের অভিযোগ, মিল বন্ধ হওয়ার পর থেকে উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে উত্তমকে নিয়ে ৪৩ জনের মৃত্যু হল। স্থায়ী রোজগার হারিয়ে অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন পাঁচ জন। তেজনারায়ণের দাদা সুকুর বলেন, ‘‘মিলটা বন্ধের পর থেকে সব যেন ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement