চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী প্রতিমা।
আজ ষষ্ঠী। চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ছে। তবে কোভিড পরিস্থিতিতে এ বার আয়োজনে জৌলুস তেমন নেই। চিরাচরিত চোখ ধাঁধানো আলোর বাহার থাকছে না। থাকছে কোভিড সংক্রান্ত কড়া অনুশাসন। ভাইরাসের ছোঁয়াচ এড়াতে মাস্ক ছাড়া ঘোরা নিষিদ্ধ। শুধু দর্শনার্থীরাই নন, কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদেরও সেই নির্দেশ মানতে হবে।
বৃহস্পতিবার জগদ্ধাত্রী পুজোর গাইড ম্যাপ প্রকাশ করে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট। ছিলেন পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর, ডিসি (চন্দননগর) তথাগত বসু, চন্দননগরের পুর-কমিশনার স্বপন কুণ্ডু। সাংবাদিক বৈঠকে সিপি জানান, মাস্ক ছাড়া দর্শনার্থীরা ঘোরাঘুরি করতে পারবেন না। কর্তব্যরত পুলিশকর্মী মাস্ক পরে না-থাকলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মণ্ডপের পাঁচ মিটার দূরে বাঁশের ব্যারিকেড করে দেওয়া হবে, যাতে দর্শনার্থী ভিতরে
ঢুকতে না-পারেন। সিপির কথায়, ‘‘কোভিড পরিস্থিতিতে দূরত্ববিধি মানতেই হবে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, প্রতি বছরের মতো বিকেল ৪টে থেকে পরের দিন সকাল ৬টা পর্যন্ত জিটি রোডে ‘নো-এন্ট্রি’ করা হবে। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশ সহায়তা বুথ থাকবে। নজরদারির দায়িত্বে থাকবেন এসপি পদমর্যাদার ছ’জন অফিসার। তাঁদের সঙ্গে ২০ জন ডিএসপি এবং ৩৫ জন ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিক থাকবেন। এসআই-এএসআইয়ের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চারশো। জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষে বিশেষ ট্রেন চালানো হয়। এ বছর তা হচ্ছে না।
করোনার কারণে এ বার ভাসানের শোভাযাত্রাও বন্ধ। প্রতিমা নিরঞ্জনে একটি পুজো কমিটির তরফে সর্বোচ্চ ১৫ জন থাকতে পারবেন। ডিজে বাজানো, বাজি পোড়ানো বন্ধ। নির্দেশ না মানলে কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পুলিশ।
দুর্গাপুজোয় বাড়তি ভিড় না হওয়ায় স্বস্তি ছিল প্রশাসনে। কালীপুজোয় সে ভাবে বাজি না-ফাটায় বাহবা কুড়িয়েছে পুলিশ প্রশাসন। সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এ বার প্রশাসনের নজর চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোয়। তাই দর্শনার্থীদের আগেই সতর্ক করে প্রশাসনের বার্তা—আবেগের বশে বিচ্যুতি
ঘটলে পরিস্থিতি বিগড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। অতিরিক্ত ভিড় হলে বা মাস্ক না-পরে ঘুরলে করোনার আগল খুলে যেতে পারে।
একটি সরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘পরিস্থিতির
কথা কারও অজানা নয়! দেশ-বিদেশের নানা উদাহরণের কথাও তাঁরা জানেন। তাই এ বার হুল্লোড় করলে তা অবিবেচকের কাজ হবে। ভিড় বাঞ্ছনীয় নয়।’’