TMC

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ নিয়ে ‘ক্ষোভ’ শাসকদলে

অনুপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই দাবি করেছেন, শুক্রবার বিকেলের আগে পর্যন্ত ওই অনুষ্ঠান সম্পর্কে তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। তার আগের দিন জেলা পরিষদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দুই সদস্যা তাঁদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। শুক্রবার বিকেল থেকে অবশ্য জনপ্রতিনিধিদের ফোনে আমন্ত্রণ জানানো শুরু হয় বলে দাবি করেছে জেলা প্রশাসন।

Advertisement

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২০ ০২:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

তৃণমূল রাজ্যের শাসকদল। অথচ, শনিবার চণ্ডীতলা-২ ব্লকের বরিজহাটিতে সরকারি অনুষ্ঠানে গরহাজির বিধায়ক-সহ অন্তত সাত জনপ্রতিনিধি! কেউ জানিয়েছেন আমন্ত্রণের ধরনে তাঁদের ক্ষোভের কথা। কেউ সামনে এনেছেন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব।

Advertisement

‘পথশ্রী’ প্রকল্পে এই জেলায় প্রায় সাতশো রাস্তা সংস্কার হওয়ার কথা। জেলা প্রশাসনের তরফে শ্রীরামপুর মহকুমার প্রকল্পের সূচনার অনুষ্ঠানটিই এ দিন হয় বরিজহাটিতে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও-সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিক, মন্ত্রী অসীমা পাত্র, জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী, সভাধিপতি মেহবুব রহমান, সহ-সভাধিপতি সুমনা সরকার, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়, মনোজ চক্রবর্তী প্রমুখ।

কিন্তু দেখা যায়নি চণ্ডীতলার বিধায়ক স্বাতী খন্দকার, জেলা পরিষদের স্থানীয় সদস্য অনিন্দিতা মণ্ডল, পঞ্চায়েতে সমিতির সভানেত্রী কাবেরী ঘোষ, সহ-সভাপতি বিকাশ ঘোষ, বরিজহাটি পঞ্চায়েতের প্রধান মামণি পালকে। চণ্ডীতলা-১ ব্লক থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদের দুই সদস্য-সহ জনপ্রতিনিধিদের আরও অনেকেই ছিলেন অনুপস্থিতের তালিকায়।

Advertisement

অনুপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই দাবি করেছেন, শুক্রবার বিকেলের আগে পর্যন্ত ওই অনুষ্ঠান সম্পর্কে তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। তার আগের দিন জেলা পরিষদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দুই সদস্যা তাঁদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। শুক্রবার বিকেল থেকে অবশ্য জনপ্রতিনিধিদের ফোনে আমন্ত্রণ জানানো শুরু হয় বলে দাবি করেছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু তাতে ক্ষোভ কমেনি।

চণ্ডীতলার জেলা পরিষদ সদস্য এ দিনের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত অনিন্দিতা মণ্ডল বলেন, ‘‘জনগণের ভোটে আমি নির্বাচিত। আমার নির্বাচনী ক্ষেত্রে অনুষ্ঠানের কথা মাত্র এক দিন আগে নমো নমো করে জানানো হবে! খুব খারাপ লাগল। এটা অসম্মানের শামিল।’’ বিধায়ক স্বাতী একদিন আগেই বলেছিলেন, ‘‘আমাকে কেউ কিছু বলেননি। কারা অনুষ্ঠান করছেন, কোথায় করছেন, কিছুই জানি না। শেষ মুহূর্তে জানালেও যাব কিনা, ভেবে দেখব।’’

চণ্ডীতলায় তৃণমূলের রাজনীতিতে বিধায়ক স্বাতী খন্দকার এবং জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়ের গোষ্ঠী বিভাজন রয়েছে বলে দলেরই একটি সূত্রের খবর। আমন্ত্রণের বিষয়টি নিয়ে বিধায়ক-ঘনিষ্ঠেরা সুবীরের কলকাঠি নাড়ানোর অভিযোগ করছেন। যদিও সুবীরের দাবি, ‘‘এটা সরকারি অনুষ্ঠান। আমন্ত্রণ করছে প্রশাসন। আমার কাছেও শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আমন্ত্রণ আসেনি। উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটাতে এ নিয়ে অকারণ জলঘোলার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) তথা পথশ্রী প্রকল্পের নোডাল অফিসার প্রলয় মজুমদার জানান, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকরা ফোন করে বা হোয়াটসঅ্যাপে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানান।

আমন্ত্রণের ধরন নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের কেউ কেউ তাঁর কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে মেনে নিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব। এ দিন বিকেলে জঙ্গলপাড়ায় একটি অনুষ্ঠানে তিনি এবং বিধায়ক স্বাতী একসঙ্গেই ছিলেন। দিলীপ বলেন, ‘‘পথশ্রী-র অনুষ্ঠানে প্রশাসনই আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের দলের কয়েক জন জনপ্রতিনিধি আমার কাছে ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। তবে, এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার বিষয় নয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement