সাজই সার, মেলে না ক্যানসারের চিকিৎসা

কলকাতার চৌহদ্দি পার হয়ে জেলায় রাজ্যের একমাত্র ক্যানসার চিকিৎসা কেন্দ্র চন্দননগর রূপলাল নন্দী মেমোরিয়াল হাসপাতালের এখন এমনই।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চন্দননগর শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:০৩
Share:

নবসাজে: ঝাঁ চকচকে হাসপাতাল ভবন। ছবি: তাপস ঘোষ

হাসপাতাল আছে। বেতন আছে কর্মচারীদের। শুধু চিকিৎসা পরিষেবাই পান না রোগীরা।

Advertisement

কলকাতার চৌহদ্দি পার হয়ে জেলায় রাজ্যের একমাত্র ক্যানসার চিকিৎসা কেন্দ্র চন্দননগর রূপলাল নন্দী মেমোরিয়াল হাসপাতালের এখন এমনই। এক সময় এই হাসপাতালটিতে পুরোদস্তুর ক্যানসারের চিকিৎসা হত। রোগীদের কেমোথেরাপিও দেওয়া হত। হুগলি শিল্পাঞ্চল, উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, বর্ধমান-সহ অনেক জেলা থেকেই ভিড় জমাতেন রোগীরা।

চন্দননগরের বাসিন্দা, এই হাসপাতাল নিয়ে আন্দোলনরত বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শহরের গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালটিকে চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হল। আর তারপর থেকেই এই হাসপাতাল শেষ। ১২ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক, রোগী কমতে শুরু করল। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রককে পুরো বিষয়টি জানিয়েছি।’’

Advertisement

চন্দননগর ক্যানসার হাসপাতালে একজন নিরাপত্তাকর্মী আছেন এখন। তিনি শহরে একদিন বেতন আনতে যান। আর ওই হাসপাতালের অন্য যে সব কর্মী এবং চিকিৎসকেরা ছিলেন তাঁরা এখন চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের কর্মী হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে বেতন পান।

রূপলাল নন্দী হাসপাতালের জায়গা এবং বাড়ি দান করা জমিতে গড়ে উঠেছে। কয়েক বছর আগে ওই হাসপাতালের খোলনলচে বদলে বহু টাকার বিনিময়ে সারানো হয়। অথচ অভিযোগ, হাসপাতালের দামি যন্ত্র পড়ে রয়েছে। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায়, যে পরিবারের পক্ষ থেকে বাড়ি এবং জমি দান করা হয় তাঁরা জানিয়েছিলেন, চিকিৎসা না হলে ওই ভবন ফেরত নেওয়া হবে। পরে অবশ্য শহরের নাগরিকদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

পুরো বিষয়টি জানিয়ে চন্দননগরের কয়েকটি সংস্থা মিলিতভাবে কেন্দ্রীয় সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে লিখিত জানান। সেখান থেকে চিঠির উত্তর আসে। মহকুমা প্রশাসনের কাছে দরবার করা হয়। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘আমরা সরাসরি কলকাতায় চিত্তরঞ্জন ক্যানসার রিসার্চ কর্তৃপক্ষকে জানাই, দিল্লির প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে চিঠির উত্তর আসে। কিন্তু কলকাতা থেকে কিছু আসে না।’’

এরপরই প্রতিক্রিয়া হয়। আজ, শুক্রবার কলকাতায় চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের ডিরেক্টর জয়ন্ত চক্রবর্তীর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বিশ্বজিৎবাবুরা। তাঁরা বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে ক্যানসার রোগী এবং তাঁদের বাড়ির লোকজন থাকবেন। আমাদের একটাই দাবি হাসপাতাল ফের চালু হোক।’’

চন্দননগরের পুর-কমিশনার স্বপন কুণ্ডু বলেন, ‘‘শহরবাসীর পক্ষ থেকে যদি বিষয়টি লিখিতভাবে জানান, তাহলে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলতে পারি। হাসপাতালটি চালু হলে শহরবাসীর ভাল হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement