চেনা ছবি। — দীপঙ্কর মজুমদার
একটি ওভারব্রিজ ছিলই। দাবি ছিল আরও একটি ওভারব্রিজের। সেই দাবিও মিটেছে। কিন্তু তার পরেও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন সাঁতরাগাছির ছবিটি বদলালো না। নিত্যযাত্রীদের একাংশ এখনও রেললাইন পেরিয়েই যাতায়াত করছেন। রেলের তরফ বার বার আবেদন করা হলেও কার্যত শুনছেন না তাঁরা।
রেল সূত্রের খবর, ২০১২-এর ৩১ মার্চ সাঁতরাগাছি স্টেশনেই লাইন পার হতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ছ’জনের। তার পর থেকেই নড়েচড়ে বসেন রেল কর্তৃপক্ষ। পাঁচ ও ছয় নম্বর প্ল্যাটফর্মের পরেই কোনা এক্সপ্রেসওয়ে। ট্রেন থেকে চার, পাঁচ বা ছয় নম্বর প্ল্যাটফর্মে নেমে যাত্রীরা কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে যান। ২০১২-এর ওই ঘটনার পরে লাইন পারাপার বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেই নিত্যযাত্রীরা নতুন করে আরও একটি ওভারব্রিজ তৈরির দাবি তোলেন। কারণ, প্রথম ওভারব্রিজটি স্টেশনের পিছনে দিকে অনেকটা দূরে ছিল। তাই বাধ্য হয়েই রেললাইন পার হতে হয় বলে যুক্তি দিতেন যাত্রীদের একাংশ। এর পরে চার ও পাঁচ থেকে ছয় নম্বরে প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার জন্যে ওভারব্রিজ তৈরি করে রেল। তবুও রেললাইন পার করেই যাতায়াত করেন তাঁরা।
বিশেষ করে সকালে অফিসের সময়ে পাঁচ ও চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে এক সঙ্গে হাওড়ামুখী ট্রেন ঢুকলে হুড়মুড়িয়ে যাত্রীদের একাংশ লাইনে নেমে পড়েন। তার পরে দৌড়ে গিয়ে লাফিয়ে ছ’নম্বর প্ল্যাটফর্মে উঠে যান। বাউড়িয়ার বাসিন্দা নিত্যযাত্রী চন্দন মণ্ডল। ওভারব্রিজ দিয়েই পার হন। তিনি বললেন, ‘‘২০১২-এর দুর্ঘটনার পরে নতুন ওভারব্রিজ তৈরি হয়েছে। তা সত্ত্বেও যাত্রীদের অনেকেই এ ভাবে রেললাইন পার হচ্ছেন। যে কোনও সময়ে ফের বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে।’’
যাত্রীদের অভিযোগ, রেল বার বার ঘোষণা করলেও ওখানে পুলিশ রাখে না। দুর্ঘটনার পরে বেশ কিছু দিন পুলিশের নজরদারি চলেছিল। মাইকে ঘোষণার পাশাপাশি পুলিশের নজরদারি থাকার কারণে যাত্রীরা লাইনে নামতে ভয় পেতেন। কিন্তু এখন পুলিশের দেখা মেলে না। ফলে আইনকে থোরাই কেয়ার। আবার দুর্ঘটনা ঘটলে তবেই কি হুঁশ ফিরবে রেল কর্তৃপক্ষের? এই প্রশ্ন নিত্যযাত্রীদের অনেকেরই।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘ঘোষণা করেও লাভ হয়নি কোনও। এ বার রেল পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।’’