আরও ট্রেন বাড়ানোর দাবি যাত্রীদের
Indian Railways

ঘুচল দূরত্ব, ভিড়ে বাড়ছে উদ্বেগ

যাত্রীদের একাংশের আশঙ্কা, কালীপুজো, ভাইফোঁটা মিটলে ভিড় লাগামছাড়া হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া-চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২০ ০৭:১০
Share:

ধাক্কাধাক্কি: বৃহস্পতিবার বিকেলে শেওড়াফুলি স্টেশনে এ রকম ভিড় দেখা গেল। ছবি: কেদারনাথ ঘোষ

অফিস-টাইমে ট্রেনের কামরায় একটা আসন ছেড়ে বসা যে সোনার পাথরবাটি, বুধবারেই মালুম হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তা আরও পরিষ্কার হল। ঠাসা ভিড় নিয়ে ছুটল লোকাল।

Advertisement

বুধবার, প্রথম দিন ভিড় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে ছিল দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর বিভাগের বিভিন্ন স্টেশনে। কিন্তু বৃহস্পতিবার কার্যত চৌপাট হয়ে গেল করোনা আবহের শারীরিক দূরত্ববিধি। ট্রেনের চিরাচরিত অবস্থা ফিরল। বাগনান, উলুবেড়িয়া, বাউড়িয়া, আন্দুল-সহ নানা স্টেশনেই এই ছবি। এ দিনও থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু টিকিট কাউন্টারের সামনের ভিড় অনিয়ন্ত্রিত। পুলিশের সংখ্যা কম। মাঝেমধ্যে পুলিশ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলেছে। কিন্তু পুলিশ চলে যেতেই জটলা বেড়েছে।

সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ট্রেনের ভিতরে। মুখোমুখি দু’টি সারির ছ’টি আসনে তিন জন বসার কথা থাকলেও সেখানে আট জন বসেছেন। অনেকে দাঁড়িয়েও গিয়েছেন। যাত্রীদের একাংশের আশঙ্কা, কালীপুজো, ভাইফোঁটা মিটলে ভিড় লাগামছাড়া হবে। তখন পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে। ভিড় নিয়ন্ত্রণে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি তুলছেন তাঁরা। ভিড় এড়ানো না গেলে করোনা সংক্রমণ হু হু করে বাড়বে, এই আশঙ্কা চিকিৎসকদেরও। তাঁদেরও নিদান, অফিস-টাইমে ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে হবে।

Advertisement

দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রের দাবি, বুধবার সারাদিনে ৩৪ শতাংশ আসন ভর্তি হয়েছিল। সকাল-সন্ধ্যায় অফিস-টাইমে এই হিসেব ৫৩% এবং ৫৮%। যাত্রিসংখ্যা বাড়লে ট্রেনের সংখ্যা বাড়তে পারে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘বুধবার থেকেই অফিস-টাইমে ৭০% ট্রেন চালানো হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আরও বাড়ানোর কথা বিবেচনা করা হবে।’’

অফিস-টাইমে পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান মেন ও কর্ড এবং তারকেশ্বর শাখার ট্রেনে যাত্রীদের মুখে মাস্ক না থাকলে করোনা আবহ বোঝার উপায় ছিল না। এমনই ঠাসাঠাসি ভিড়। সন্ধ্যায় আপ বর্ধমান লোকাল শেওড়াফুলিতে থামলে দেখা গেল, উপচে পড়া ভিড়। ভিতরে জায়গা না পেয়ে গেটে ঝুলছেন অনেকে।

হাওড়া-কাটোয়া লোকালে কর্মসূত্রে চুঁচুড়ায় যাতায়াত করেন জিরাটের মণিচাঁদ পাথর। তাঁর কথায়, ‘‘ভিড় আগের তুলনায় কিছুটা কম হলেও যে দূরত্ববিধি মানতে বলা হয়েছিল, তা সম্ভব হচ্ছে না। কালীপুজোর পরে ভিড় অনেকটাই বাড়বে মনে হচ্ছে। তখন কী হবে, বলা মুশকিল।’’ নসিবপুরের দেবকুমার সাঁতরার কথায়, ‘‘সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনোর তাগিদে মানুষকে ভিড়েই উঠতে হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানে একটু ঘন ঘন ট্রেন চালানো দরকার।’’ একই বক্তব্য নিত্যযাত্রী সংগঠন ‘তারকেশ্বর লাইন প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক হরদাস চক্রবর্তীর।

নাগরিক সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া সিটিজেন্স ফোরাম’-এর সভাপতি শৈলেন পর্বতের মন্তব্য, ‘‘পরিস্থিতির কথা ভেবে আগেকার অনুপাতে ১০০ নয়, ১২০% ট্রেন চালাতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement