—প্রতীকী ছবি।
একের পর এক গণপিটুনির ঘটনায় টনক নড়েছে প্রশাসনের। হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের তরফে এলাকায় ঘুরে বেড়ানো ভবঘুরে ও গৃহহীন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের আশ্রয় দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে। এ ক্ষেত্রে তাঁদের আদালতে হাজির করিয়ে মানসিক হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, এমনিতেই মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরেদের উদ্ধার করে পুলিশ। তবে সম্প্রতি যে ভাবে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, আর তার পর কোথাও ছেলেধরা, কোথাও চোর, কোথাও কিডনি পাচারকারী সন্দেহে মারধরের ঘটনা ঘটে চলেছে তাতে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। ওই পুলিশ কর্তার দাবি, গত কয়েকদিনে যে সব এলাকা বেশি স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে সেখানে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। জেলার মধ্যে সবথেকে বেশি গুজব রটেছে শ্যামপুর এলাকায়। গত দু’সপ্তাহে ১০-১২ জন ভবঘুরেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে গ্রামীণ জেলা পুলিশ সূত্রের খবর। অন্যত্রও অভিযান চলছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গুজবের বলি সব থেকে বেশি হচ্ছেন এই ভবঘুরেরা। সামান্য মানসিক বিকৃতি থাকলেও তাঁকে সন্দেহে চোখে দেখার প্রবণতা তৈরি হয়েছে মানুষের মধ্যে। শুধু মফস্সলে নয়। খাস কলকাতার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলেও এমনই ঘটনার বলি হতে হয়েছিল হাওড়ার বাসিন্দা কোরপান শাহকে। সেই আতঙ্ক ধীরে ধীরে ফিরে এসেছে গত বছরের শেষ থেকেই।
হাওড়া জেলার বিভিন্ন এলাকা, অচেনা কাউকে দেখলেই ধরে জেরা করছেন গ্রামের মহিলা পুরুষেরা। কথাবার্তায় সামান্য অসংলগ্নতা ধরা পড়লেই শুরু হচ্ছে মারধর। কেউ কখনও পুলিশে খবর দিলেও বিপদ। পুলিশ কর্মীদের একাংশ জানিয়েছেন, খবর পেয়ে আক্রান্তকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশকেই হেনস্থা হতে হচ্ছে।
হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা বলেন, ‘‘আমরা সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা প্রচার চালাচ্ছি। কিন্তু তার আগে ওই অসহায় মানুষগুলোকে নিরাপত্তা দেওয়া জরুরি।’’