সময়ে পরিষেবা দিতে আইন আসছে হাওড়া পুরসভায়

হাওড়া পুরসভার কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ এ নিয়ে বলেন, ‘‘কয়েক মাসের মধ্যে এই জনপরিষেবা আইনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রত্যেক বিভাগের কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। পরিষেবা নিতে এসে মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে জন্যেই এই আইন। তবে বিভিন্ন কারণে এই আইন এত দিন কার্যকর করা যায়নি।’’

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৮ ০৪:১৬
Share:

দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে হাওড়া পুরসভায় চালু হতে চলেছে জনপরিষেবা আইন। ফলে এখন থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনও পরিষেবা দেওয়া না হলে অথবা তাতে কোনও গাফিলতি প্রমাণিত হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুর আধিকারিকদের বিরুদ্ধে জরিমানা অথবা আইনি পদক্ষেপ করা যাবে। সম্প্রতি পুর বৈঠকে এই আইন কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

হাওড়া পুরসভার কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ এ নিয়ে বলেন, ‘‘কয়েক মাসের মধ্যে এই জনপরিষেবা আইনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রত্যেক বিভাগের কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। পরিষেবা নিতে এসে মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে জন্যেই এই আইন। তবে বিভিন্ন কারণে এই আইন এত দিন কার্যকর করা যায়নি।’’ হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘মানুষকে পরিষেবা দেওয়াই প্রধান লক্ষ্য। তাই মানুষের হয়রানি যাতে না হয়, সেটা দেখাও আমাদের কর্তব্য। এই কমিশন চালু হলে পুরসভার কাজে গতি আসবে বলে মনে হয়।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর হাওড়ার ‘পথের দাবি’ হলে এক বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ জনপরিষেবা আইনের চিফ কমিশনার এই আইন চালু করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন হাওড়ার মেয়রকে। পুরসভা সূত্রে খবর, রাজ্য জনপরিষেবা আইন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকেন মূলত তিন জন পুর আধিকারিক— এ ক্ষেত্রে অভিযোগ গ্রহণকারী অফিসারের ভূমিকা পালন করেন পুর সচিব। পুর কমিশনার হলেন অ্যাপিলেট অথরিটি এবং মেয়র হলেন রিভিউয়িং অফিসার। এই আইন মোতাবেক কোনও নাগরিক পুরসভায় এসে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিষেবা না পেয়ে অভিযোগ করলে ওই তিন জনকে জবাবদিহি করতে হবে। তাঁরা সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতেও বাধ্য থাকবেন। যদি তাঁরা ব্যবস্থা না নেন, তাহলে অভিযোগকারী ব্যক্তি রাজ্য জনপরিষেবা কমিশনের চিফ কমিশনারের কাছেও আবেদন করতে পারবেন।

Advertisement

এমনিতেই পুরসভায় বিভিন্ন পরিষেবামূলক কাজের জন্য গিয়ে মানুষ অহেতুক হয়রানির শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। বিশেষত হাওড়া পুরসভার বেশ কিছু আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়ারের একাংশের বিরুদ্ধে এই ধরনের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু এই আইন চালু হলে কমিশনের বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মানুষকে পরিষেবা দিতে বাধ্য থাকবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত পুর আধিকারিক বা ইঞ্জিনিয়ারেরা।

কোন দফতরের কাজের জন্য কতটা সময় দেওয়া হবে, তারও নির্ধারিত সময় বেঁধে দিয়েছে কমিশন। যেমন জলের লাইনের আবেদনের ক্ষেত্রে সময় দেওয়া হয়েছে ১০ দিন (আবেদন জমা পড়ার সময় থেকে)। বাড়ি নকশা অনুমোদনের সময়সীমা দু’মাস, নতুন ট্রেড লাইসেন্সের জন্য ৩০ দিন, কর নির্ধারণের সময় ৬০ দিন। আবর্জনা ও নিকাশি পরিষ্কার, মৃত জীবজন্তুর দেহ অপসারণের সময়সীমা ১ থেকে দু’দিন। আর ভাঙা রাস্তা ও নিকাশি মেরামতের জন্য সময় মাত্র ৭ দিন।

তবে এই আইন বলবৎ করেও কতটা কাজের কাজ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছেই। পুরসভার এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘পুরকর্মীর সংখ্যা এতটাই কম যে, এত কম সময়ের মধ্যে সব পরিষেবা দেওয়া প্রায় অসম্ভব। তাই অভিযোগের পাহাড় তৈরি হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement