বদ্ধ: দরজা বন্ধ ল্যাডলো জুটমিলের। নিজস্ব চিত্র
বাম-কংগ্রেসের ডাকা ধর্মঘটের জেরে গ্রামীণ হাওড়ার শিল্পাঞ্চলে অধিকাংশ চটকলই বন্ধ রইল। শ্রমিকরা হাজিরা না দেওয়ায় সরকারি ও বেসরকারি শিল্পতালুকগুলিতেও উৎপাদন ব্যাহত হয়।
গ্রামীণ হাওড়ার বাউড়িয়া, চেঙ্গাইল এবং সাঁকরাইল মিলিয়ে মোট পাঁচটি চটকল আছে। তার মধ্যে বাউড়িয়া এবং চেঙ্গাইলেই আছে চারটি চটকল। এক একটি চটকলে গড়ে তিন হাজার করে শ্রমিক কাজ করেন। চেঙ্গাইলের ল্যাডলো জুটমিলে ২০ শতাংশের মত শ্রমিক হাজির ছিলেন। অন্য দিকে চেঙ্গাইলেরই প্রেমচাঁদ জুটমিলে শ’দুই শ্রমিক আসেন। ফলে দু’টি চটকলেই উৎপাদন ব্যাহত হয়। বাউড়িয়ার নর্থ মিল এবং নিউ মিল এই দু’টি চটকলেই শ্রমিকরা কেউ হাজির হননি। ফলে উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ ছিল। সাঁকরাইলের ডেল্টা জুটমিলেও হাজিরা ছিল উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
সিটুর হাওড়া জেলা সম্পাদক সমীর সাহা বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, নয়া নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি যে শ্রমিকদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে তা চটকলগুলিতে সফল ধর্মঘটের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে। শ্রমিকেরা বুঝতে পেরেছেন এখনই না প্রতিবাদ করলে তা হাতের বাইরে চলে যাবে। ফলে তাঁরা ডাকে সাড়া দিয়েছেন।’’ টিইউসিসির রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রাজীব লস্কর বলেন, ‘‘শ্রমিকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ধর্মঘটকে সমর্থন করেছেন।’’ ধর্মঘটকে সফল বলে দাবি করেছেন আইএনটিইউসির জেলা সভাপতি ফাল্গুনী ঘোষও।
অন্য দিকে আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি অরূপেশ ভট্টাচার্য চটকলগুলিতে শ্রমিকদের অনুপস্থিতির বিষয়টি স্বীকার করলেও এর ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামীণ এলাকায় চটকলগুলিতে সব শ্রমিক আসেননি। তার মানে এই নয়, তাঁরা ধর্মঘটকে সমর্থন করেন। অনেকেই ভেবেছেন রাস্তায় ঝামেলা হতে পারে। তাই তাঁরা বাড়ি থেকে বেরোননি।’’ একইসঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়গুলি নিয়ে অনেক আগেই পথে নেমেছেন। তাঁর মত হল কাজ চালু রেখেই প্রতিবাদ করতে হবে। সেই নীতি মেনে অনেক শ্রমিক চটকলগুলিতে কাজে এসেছেনও।’’
বীরশিবপুর শিল্পতালুক এবং সাঁকরাইলের সরকারি শিল্পতালুক, ধূলাগড়ি ও জঙ্গলপুরের বেসরকারি শিল্পতালুকে আছে অসংখ্য ছোট কারখানা। লক্ষাধিক শ্রমিক কাজ করেন। এই চারটি শিল্পতালুকেও সিংহভাগ শ্রমিক কাজে আসেননি। যাঁরা এসেছেন তাঁদের নিয়ে কাজ হয়েছে নামমাত্র। অনেক কারখানা আবার শ্রমিক না আসায় এ দিনের মত বন্ধই করে দিতে হয়।