ঘরের অবস্থা।—নিজস্ব চিত্র।
দেওয়াল থেকে খসে পড়ছে চাঙড়।
ছাদ থেকে চুঁইয়ে পড়ছে জল।
বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে পোড়ো বাড়ি। যদিও আসলে সেগুলি পুলিশ কর্মীদের থাকার ব্যারাক।
রাত বারোটায় ডিউটি শেষে সবে ব্যারাকে ঢুকেছেন। হঠাৎই শুরু হল বৃষ্টি। ব্যাস! কিছুক্ষণের মধ্যে জলে ভরে গেল ব্যারাক। এই অভিজ্ঞতা গ্রামীণ হাওড়ার পুলিশ ব্যারাকে থাকা পুলিশ কর্মীদের কম বেশি সবার। বসবাসের অযোগ্য ছোট ছোট খুপরি ঘরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন পুলিশ কর্মীরা। শুধু ব্যারাক নয়, কয়েকটি থানার মূল অফিসের অবস্থাও এরকম। ব্যারাকগুলির সব থেকে খারাপ অবস্থা হয় বর্ষার সময়। তখন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও বিনিদ্র রাত কাটাতে হয় পুলিশকর্মীদের। কারণ ব্যারাকে জমে থাকে জল।
হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘বিভিন্ন থানায় ব্যারাক সংস্কার করা হয়েছে। কয়েকটি নতুন ব্যারাক তৈরির কাজ চলছে। সেগুলো হয়ে গেলেই সমস্যা মিটে যাবে।’’
উলুবেড়িয়া থানায় পুলিশ ব্যারাকগুলি কয়েকটি বাড়িতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তার মধ্যে ১০টি ঘরের অবস্থা খুবই খারাপ। বছর দশেকের বেশি সময় ধরে ব্যারাকের ঘরগুলি এই অবস্থায় রয়েছে। এই থানার পশ্চিম দিকের একটি ব্যারাকে গিয়ে দেখা গেল ঘরের জানলা-দরজা ভাঙা, ছাদে ফাটল। দেওয়ালে চাঙড় খসে যাওয়ার চিহ্ন। অন্য ব্যারাকগুলিরও কমবেশি একই দশা। একটি নতুন ব্যারাক হলেও সেটিতে বেশি জন থাকতে পারেন না। বাগনান থানার উত্তর দিকের ব্যারাকের ছাদ দিয়ে জল পড়ে। পুলিশ কর্মীদের ক্ষোভ, বর্ষায় সময় বেশির ভাগ রাত জেগেই কেটে যায়। শ্যামপুর থানার ব্যারাকে ছাদের উপরে পুলিশকর্মীরা চট লাগিয়ে রেখেছেন। তাতেও অবশ্য জল পড়া বন্ধ হয়নি। বৃষ্টির জল থেকে বাঁচতে একই উপায় নিয়েছে আমতা থানার ব্যারাকে থাকা পুলিশকর্মীরা। জেলার অন্য পুলিশ ব্যারাকগুলির অবস্থাও কমবেশি একই।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আমতা-সহ কয়েকটি থানায় নতুন ব্যারাক তৈরির কাজ চলছে। সেগুলি শেষ হতে এখনও বছর খানেক সময় লাগবে।
ততদিন ভাগ্যই ভরসা।