প্রতীকী চিত্র
করোনা-পর্বে অনেকেরই অনেক কিছু বদলে গিয়েছে। কারও ব্যবসা বন্ধ। কারও চাকরি গিয়েছে। কাজের অপেক্ষায় দিন গুনতে থাকা যুবক-যুবতী হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। এই পরিস্থিতিতে যুব সমাজকে কাজের দিশা দেখাতে চাইছে রাজ্য সরকার। এ জন্য সহজ শর্তে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ এবং নির্দিষ্ট অঙ্ক পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হবে বলে রাজ্য প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।প্রশাসনের আধিকারিকরা বলছেন, লকডাউনে আর্থিক কর্মকাণ্ডের উপরে যথেষ্ট বিরূপ প্রভাব পড়েছে। পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি শুধরে যায়নি। এই ধরনের প্রকল্প যুব সমাজকে কাজের সন্ধান দেবে। ফলে, অর্থনীতির চাকা অনেকাংশে সচল হবে।
রাজ্য সরকারের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প দফতরের তরফে গত ৯ সেপ্টেম্বর একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে ‘কর্মসাথী’ প্রকল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থানে নানা সুযোগ-সুবিধার কথা বলা হয়েছে। আবেদনপত্রের তদারকি এবং ঋণদানের ব্যবস্থা করার জন্য প্রতি জেলায় ‘স্ক্রিনিং কমিটি’ করা হয়েছে। জেলাশাসকের পাশাপাশি জেলার কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার, জেলা হ্যান্ডলুম অফিসার, মৎস্য, কৃষি বিপণন, উদ্যানপালন প্রভৃতি দফতরের আধিকারিকরা ওই কমিটিতে রয়েছেন। বুধবার হুগলিতে জেলাশাসকের দফতরে ওই কমিটির বৈঠক হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বৈঠকে জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও নির্দেশ দেন, আবেদনপত্র দ্রুত খতিয়ে দেখে ঋণদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। কোনও অবস্থাতেই ওই কাজ ফেলে রাখা যাবে না। এই প্রকল্পকে জনপ্রিয় করতে প্রচারের কথাও বলা হয়। জেলাশাসক বলেন, ‘‘এই প্রকল্পে যুবক-যুবতীরা বিশেষ ভাবে উপকৃত হবেন। কর্মসংস্থানের জন্য প্রশাসন তাঁদের পাশে থাকবে। বিডিও বা এসডিও দফতরে প্রকল্পের বিস্তারিত জানতে এবং আবেদন করতে পারা যাবে।’’
জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, মোবাইল ফোন মেরামত, পোশাক তৈরি, সাইকেল সারানো, চালকল, প্লাস্টিকের খেলনা তৈরি, বিউটি পার্লার, মুদি দোকান, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সারাই, মিষ্টির দোকান, দর্জি, দুগ্ধজাত জিনিস তৈরি, পোলট্রি, শূকর-ছাগল-হাঁস প্রতিপালন, পশুপালন, মাছ চাষ, পলিহাউস চাষ প্রভৃতি ক্ষেত্রের মাধ্যমে বেকার যুবক-যুবতীরা স্বনির্ভরতার রাস্তা খুঁজে পেতে পারেন।
এ সবের জন্য নির্দিষ্ট ‘কর্ম সাথী’ পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে বা বিডিও-এসডিও দফতরে সশরীরে গিয়ে আবেদন করা যেতে পারে। নির্দেশিকা অনুযায়ী, আবেদনের ১৫ দিনের মধ্যে সরকারি ব্যাঙ্কঋণ মিলবে। আবেদনকারীদের সহায়তার জন্য বিডিও এবং এসডিও দফতরে ‘সহায়তা ডেস্ক’ খোলা থাকবে। সংশ্লিষ্ট দফতরের দু’জন আধিকারিককে বিষয়টি তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হবে। ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সিরা আবেদন করতে পারবেন। ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ হলেই আবেদন করা যাবে। ঋণ দেবে রাজ্য সরকারের অধীন জেলা সমবায় ব্যাঙ্ক। ৫০ হাজার টাকার উপরের প্রকল্পের ক্ষেত্রে মহিলা, তফসিলি, জাতি-উপজাতি, সংখ্যালঘু এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য কিছুটা বাড়তি সুবিধা থাকবে।জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘গ্রাম এবং শহরাঞ্চল— সর্বত্রই বেকারেরা এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারেন। লকডাউনে কর্মসংস্থানের যা ক্ষতি হয়েছে, তার অনেকটাই এই প্রকল্প পুষিয়ে দিতে পারবে বলে মনে করছি।’’