BJP Nabanna Abhijan

রাজপথে ধুন্ধুমার

পুলিশের বাধায় গাড়ি নিয়ে এগোতে না পেরে বৈদ্যবাটীর দীর্ঘাঙ্গিতে দিল্লি রোড অবরোধ করেন বিজেপির লোকেরা। আধ ঘণ্টা অবরোধ চলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

চুঁচুড়া-উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২০ ০১:১৬
Share:

লাঠি উঁচিয়ে: বিজেপি কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ডানকুনি হাউজিং মোড়ে। ছবি: দীপঙ্কর দে

বিজেপির নবান্ন অভিযানকে ঘিরে বৃহস্পতিবার কলকাতা এবং হাওড়া শহরে তুলকালাম পরিস্থিতি হয়। তার আঁচে তপ্ত হয়ে ওঠে হুগলির বিভিন্ন এলাকার রাজপথ এবং হাওড়ার ধূলাগড়ি টোলপ্লাজ়া। দুই জেলাতেই নবান্নমুখী বিজেপি কর্মীদের গাড়ি আটকায় পুলিশ। তা নিয়ে দু’পক্ষের বচসা, আন্দোলনকারীদের ইট-পাটকেল ছোড়া, পুলিশের লাঠিচার্জ— কিছুই বাদ যায়নি। একাধিক পুলিশকর্মী আহত হন। পুলিশের মারে দলের কর্মীরা জখম হয়েছেন বলে বিজেপির অভিযোগ। রাজপথে পুলিশ এবং বিক্ষোভকারীদের দ্বৈরথে যানজটে হাঁসফাঁস অবস্থা হয় সাধারণ মানুষের।

Advertisement

সকাল থেকেই হাওড়া ও মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাস, ট্রেকার, ম্যাটাডর, মোটরবাইকে বিজেপি কর্মীরা নবান্নের উদ্দেশে রওনা হন। ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে ধূলাগড়ি টোলপ্লাজ়ার কাছে বিজেপির পতাকা লাগানো গাড়ি হাওড়া

গ্রামীণ জেলা পুলিশ ঘুরিয়ে দিতে শুরু করে। ঘেরাটোপ পেরোতে না-পেরে সাড়ে ১০টা নাগাদ বিজেপি কর্মীরা বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি চালায়। পুলিশ আধিকারিকরা আন্দোলনকারীদের লাথি মারেন বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীরা প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করেন।

Advertisement

এর মধ্যেই অনেক গাড়ি দলীয় পতাকা খুলে নবান্নর দিকে রওনা হয়। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ পুলিশ ফের গাড়ি আটকালে দ্বিতীয় দফায় অবরোধ হয়। হাওড়া গ্রামীণ জেলা বিজেপি সভাপতি শিবশঙ্কর বেজের অভিযোগ, ‘‘পুলিশের মারে আমাদের অনেকে আহত হয়েছেন।’’ মারধর এবং লাঠি চালানোর অভিযোগ হলে খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সৌম্য রায়।

বিজেপির অভিযান সামলাতে হুগলিতে বুধবার দফায় দফায় বৈঠক করেন পুলিশকর্তারা। পরিকল্পনামাফিক বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে, দিল্লি রোড, জিটি রোডের বিভিন্ন অংশে হুগলি গ্রামীণ এবং চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ প্রস্তুত ছিল। ডানকুনি টোলপ্লাজ়া, হাউজিং মোড়, এফসিআই ক্রসিংয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে পুলিশ মোতায়েন করা হয় কমিশনারেটের তরফে। এফসিআই মোড়ে ডিসি (শ্রীরামপুর) ঈশানী পালের নেতৃত্বে বড় বাহিনী ছিল।

দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বিজেপি কর্মীদের গাড়ি ডানকুনিতে ঘুরিয়ে দেয় পুলিশ। এই নিয়ে সেখানে হুলস্থুল বাধে। এগোতে বাধা পেয়ে বিজেপি সমর্থকদের একাংশ মারমুখী হয়ে ওঠেন বলে অভিযোগ। টোলপ্লাজ়ায় বিজেপি কর্মীরা এক পুলিশকর্মীকে মারধোর করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ পাল্টা লাঠি চালিয়ে তাঁদের হটিয়ে দেয়। দলের শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বসুর পিঠে পুলিশের লাঠি পড়ে বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, বিক্ষোভকারীদের ইটে এক পুলিশকর্মীর মাথা ফাটে। আরও দুই পুলিশকর্মী জখম হন।

শ্রীরামপুরের নওগাঁ, কোন্নগর, উত্তরপাড়ার বালিখাল, সিঙ্গুর-সহ বিভিন্ন এলাকাতেও পুলিশ রাস্তায় ছিল। বালিখালে অবরোধে আটকে পড়া এক মহিলার সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বচসা হয়। যানজটে ফেঁসে গন্তব্যে যেতে না পেরে অনেকে বাড়ি ফিরে যান। অসুস্থ বাবাকে নিয়ে বীরভূম থেকে কলকাতার মৌলালিতে স্নায়ুরোগের হাসপাতালে যাচ্ছিলেন প্রদীপ রায় নামে এক যুবক। অবরোধে ডানকুনিতে দীর্ঘক্ষণ আটকে তাঁর ক্ষোভ, ‘‘অবরোধকারীরা অসুস্থ মানুষকেও রেহাই দেননি।’’

পুলিশের বাধায় গাড়ি নিয়ে এগোতে না পেরে বৈদ্যবাটীর দীর্ঘাঙ্গিতে দিল্লি রোড অবরোধ করেন বিজেপির লোকেরা। আধ ঘণ্টা অবরোধ চলে। পুলিশ লাঠি চালিয়ে অবরোধকারীদের হটিয়ে দেয়। একই কারণে শেওড়াফুলি এবং চাঁপদানিতে অবরোধ হয়। শেওড়াফুলিতে অবরোধকারীদের সঙ্গে পুলিশের তর্কাতর্কি হয়। শ্রীরামপুরের মাহেশে বিজেপি সমর্থকদের একটি বাস আটকায় পুলিশ।

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর জানান, কলকাতামুখী গাড়ির যাত্রীদের বুঝিয়ে বলতে অনেকেই ফিরে যান। বিভিন্ন জায়গা থেকে ৬২ জনকে আটক করা হয়। পরে প্রত্যেককে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement