সম্মেলনে: নিজস্ব চিত্র
চার দশক পরে টনক নড়ল! পরিবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে এ বার আন্দোলনে নামতে চলেছে হুগলি জেলা সিপিএম।
দলের জেলা সম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশিত ‘গঠনতন্ত্র ও প্রস্তাবাবলি’ শীর্ষক পুস্তিকায় সে ইঙ্গিতই দিয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। তাঁরা জানিয়েছেন, বাতাসে কার্বনের পরিমাণ বাড়ছে। নানা কারণে বিপন্ন হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। তাই পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষা জরুরি। সেই কারণে আগামী দিনে তাঁরা আন্দোলনে নামবেন।
এ রাজ্যে বাম আমলেই প্রথম পরিবেশমন্ত্রী হয়েছিলেন ভবানী মুখোপাধ্যায়। অথচ, হুগলি জেলা সিপিএমের আন্দোলনের বিষয় হিসেবে পরিবেশ এত দেরিতে আসায় অবাক হয়েছেন অনেকেই। পরিবেশ নিয়ে কেন্দ্রীয় পুরস্কার পেয়েছেন এই জেলারই চন্দননগরের বাসিন্দা পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। তিনি সরকারি চাকরির সুবাদে রাজ্যের প্রথম পরিবেশমন্ত্রী ভবানীবাবুর সঙ্গে কাজও করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘এটি আক্ষেপের বিষয়। সিপিএম পরিবেশগত ভাবনাকে গুরুত্ব দিতে এত সময় নিল!’’
গত রবিবার প্রকাশ্য সমাবেশ দিয়ে শুরু হয় সিপিএমের জেলা সম্মেলন। উত্তরপাড়া গণভবনে সোমবার থেকে তিন দিনের রুদ্ধদ্বার সম্মেলন শেষ হল বুধবার। সুদর্শন রায়চৌধুরীর জায়গায় নতুন জেলা সম্পাদক হলেন দেবব্রত ঘোষ। তিনি ডানকুনির নেতা। সাংগঠনিক কাঠামো পরিবর্তনের পরে এ বারের সম্মেলন ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সিপিএম সূত্রের খবর, লোকাল কমিটি, জোনাল কমিটি তুলে দিয়ে এখন জেলা সংগঠনে থাকছে শুধু তিনটি স্তর— শাখা, এরিয়া এবং জেলা। এতে খুশি দলের প্রবীণেরা।
আরামবাগে দলের শ্রমিক সংগঠনে সামনের সারিতে থাকা এক প্রবীণের কথায়, “এতদিন দলের সংগঠনে মাথা বেশি ছিল। এখন সেই জায়গা থেকে সরে এসে শাখা ও এরিয়া কমিটিতে ভাগ হওয়ায় এ বার আমরা সরাসরি দলের কর্মী এবং সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে পারব।’’
তবে, শেষ দিনে দলের অন্দরে সবচেয়ে বেশি চর্চা চলেছে নতুন জেলা সম্পাদক কে হবেন তা নিয়ে। শেষমেশ দলীয় নেতৃত্ব বেছে নেন দেবব্রতবাবুকেই। দলের এক প্রবীণ নেতা জানান, কঠিন সময়ে সুদর্শনবাবু যোগ্যতার সঙ্গে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দেবব্রতবাবু জনপ্রিয় নেতা। তিনিও জেলায় দলকে যথাযথ নেতৃত্ব দিতে পারবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন ওই প্রবীণ নেতা। দেবব্রতবাবু বলেন, ‘‘সামনে পঞ্চায়েত ভোট। পঞ্চায়েতে সংগঠনকে মজবুত করে লড়াই একমাত্র পথ।’’