ভিক্টর রায়।
চেন্নাইতে কাজে গিয়ে সেখানকার একটি হোটেলে অস্বাভাবিক মৃত্যু হল হিন্দমোটরের এক যুবকের। শনিবার হোটেলের শৌচাগার থেকে গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় ভিক্টর রায় (৩২) নামে ওই যুবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি হিন্দমোটরের ধর্মতলায় একটি আবাসনে থাকতেন। সেখানে তাঁর বাবা-মা এবং জ্যাঠতুতো দিদি রয়েছেন।
ওই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিক্টর এমবিএ পাশ করে বছর দু’য়েক আগে একটি বহুজাতিক সংস্থায় কাজ নিয়ে চেন্নাই যান। সেখানে একটি আবাসনে তিনি থাকতেন। পুরনো সংস্থা ছেড়ে গত সোমবার তিনি একটি জাহাজ সংস্থায় যোগ দেন। শনিবার দিনভর বাড়ির লোকেরা চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করতে পারেননি। তাঁরা জানান, ফোন বেজে যায়। রাত সওয়া সাতটা নাগাদ চেন্নাইয়ের রামাপুরম থানা থেকে বাড়িতে ফোন করে ভিক্টরের দেহ উদ্ধারের কথা জানানো হয়।
ওই খবর পেয়ে রবিবার মৃতের আত্মীয়েরা চেন্নাই যান। সন্ধ্যায় সেখান থেকে ভিক্টরের পিসতুতো দাদা সুশান্ত দাস জানান, আজ, সোমবার দেহের ময়নাতদন্ত হবে। পুলিশ আধিকারিকরা তাঁদের জানিয়েছেন, হোটেলের ঘর এবং শৌচাগারের দরজা ভেঙে ভিক্টরের দেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তদন্ত চলছে। ভিক্টরের মোবাইল ফোন ঘেঁটে এবং অন্য ভাবে পুলিশ সূত্র খোঁজার চেষ্টা করছে। সুশান্ত বলেন, ‘‘শুনছি, এক যুবক হোটেলে ভাইয়ের সঙ্গে ছিলেন। শনিবার সকালের দিকে তিনি বেরিয়ে যান। পুলিশ আমাদের জানিয়েছে, দরজা ভেঙে কী ভাবে দেহ উদ্ধার হয়েছে, তার ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা হয়েছে। আমরা ওই রেকর্ডিং পুলিশের কাছে দেখতে চাইব।’’
উচ্চশিক্ষিত ওই যুবকের মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে। রবিবার উত্তরপাড়া-কোতরংয়ের পুরপ্রধান দিলীপ যাদব ভিক্টরদের ফ্ল্যাটে যান। তিনি চেন্নাইয়ে সংশ্লিষ্ট থানার আধিকারিকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। পরে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘তরতাজা ছেলেটির মৃত্যু কী কারণে হল, আমরা সবাই তা জানতে চাই। পুলিশের কাছে যথাযথ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি আমরা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট জায়গায় নিশ্চয়ই যোগাযোগ করা হবে।’’
মৃতের জ্যাঠতুতো দিদি দীপা রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ভাইয়ের সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল না। ও খুব হাসিখুশি ছিল। কী ভাবে এমন ঘটল, বুঝতে পারছি না। পুলিশ ভাল ভাবে তদন্ত করে দেখুক।’’ অপর এক আত্মীয় শুভ্রকান্তি করের প্রশ্ন, ‘‘সকাল থেকে যদি হোটেলের ঘর বন্ধ থাকে, তা হলে দেহ উদ্ধার করে আমাদের খবর পাঠাতে সন্ধ্যা হয়ে গেল কী করে?’’