সমবায় সমিতির পদাধিকারী ঠিক করা নিয়ে হুগলির বলাগড়ে চরমে উঠেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দলের এক গোষ্ঠীর অভিযোগ, তাদের আটকাতে অন্য গোষ্ঠীর নেতারা সিপিএম এবং কংগ্রেসের সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন।
গুপ্তিপাড়া ২ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেডের সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৩০০। সম্প্রতি ওই সমবায়ে বোর্ড অব ডিরেক্টরস ঠিক হয়। সমবায় সূত্রে খবর, ৯টি আসনের মধ্যে পাঁচটি আসনে তৃণমূল, তিনটিতে সিপিএম এবং একটিতে কংগ্রেসের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়। শুক্রবার বোর্ড অব ডিরেক্টরদের মধ্যে সভাপতি, সহ সভাপতি এবং সম্পাদক—এই তিন জন পদাধিকারী ঠিক হওয়ার কথা ছিল। তৃণমূলের একাংশের দাবি, আসন সংখ্যা বেশি থাকায় দল থেকেই তিন জন পদাধিকারী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুক্রবার ভোটাভুটিতে বিষয়টি উল্টে যায়। তিনটি পদের মধ্যে কংগ্রেস এবং সিপিএম একটি করে পেয়ে যায়। অন্য আসনে নির্বাচিত হন তৃণমূলের শম্ভুচরণ ঘোষ।
তৃণমূলের আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে শম্ভুবাবু দলের ব্লক সভাপতি শ্যমাপ্রসাদ রায় বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী। বাকি চার সদস্য স্থানীয় বিধায়ক তথা প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অসীম মাঝির ঘনিষ্ঠ। ওই সদস্যদের অভিযোগ, অসীমবাবুকে হেয় করতেই শম্ভুবাবু সিপিএম এবং কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। পরোক্ষে তাঁকে সমর্থন করেছেন শ্যামাপ্রসাদবাবু। যদিও শ্যামাপ্রসাদবাবুর অভিযোগ মানেননি। তাঁর দাবি, ‘‘ওরা যা বলছে, সব রটনা। দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, বিধায়কের লোকেরাই সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বোর্ড গঠন করেছে।’’ শম্ভুবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘যা করেছি, দলের নির্দেশেই করেছি।’’
বিধায়ক অসীমবাবু বিতর্কে ঢুকতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘ঠিক কী হয়েছে, খোঁজ নিচ্ছি।’’ তবে সমবায়ে অসীমবাবুর শিবিরের লোক হিসেবে পরিচিত প্রভাস ঘোষের অভিযোগ, ‘‘শম্ভুবাবু দলকে কালিমালিপ্ত করলেন। বিধায়ককে হেনস্থা করতেই সিপিএম, কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন তিনি।’’
শাসক গোষ্ঠীর এই কোন্দলে ক্ষুব্ধ সমবায়ের সাধারণ সদস্যরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্যের ক্ষোভ, ‘‘সমবায়টি এমনিতেই লাভজনক নয়। তার উপর শাসক দলের কোন্দল। ফলে সমস্যা বাড়ল।’’