বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভাঙা হচ্ছে শেড। শনিবার প্রকল্প এলাকায় ছবি তুলেছেন দীপঙ্কর দে।
আগের দিন বিস্ফোরণের সময় পাথরের টুকরো প্রকল্প এলাকা থেকে সরাসরি ছিটকে এসে পড়ছিল এক্সপ্রেসওয়ের উপর। তাতে কেউ জখম বা কোনও গাড়ির ক্ষতি না হলেও শনিবার অবশ্য কোনও ঝুঁকিই নিতে চায়নি প্রশাসন। এ দিনও টাটা প্রকল্প এলাকায় শেড ভাঙার জন্য বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তবে তার আগেই টাটা প্রকল্প এলাকায় দুর্গাপুরএক্সপ্রেসওয়ের কলকাতা থেকে বর্ধমানমুখী লেনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। যাতে বিস্ফোরণের সময় কোনও পাথর বা লোহার টুকরো ছিটকে কারও গায়ে লেগে অনর্থ না ঘটে।
টাটা প্রকল্প এলাকায় সানাপাড়া লাগোয়া যে শেডটি রয়েছে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে তার দূরত্ব অনেকটাই কম। শুক্রবার সেখানে বিস্ফোরণের সময় পাথরের টুকরো প্রকল্প এলাকা থেকে সরাসরি ছিটকে এসে পড়েছিল এক্সপ্রেসওয়ের উপর। শনিবার বিকেল পাঁচটার পর থেকে কলকাতা-বর্ধমানমুখী গাড়ি চলাচলের লেনটি দফায় দফায় কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাস্তা বন্ধ রাখার পুলিশের সবুজ সংকেত পেতেই প্রকল্প এলাকায় থাকা কর্মীরা বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকেন। সন্ধের পর পুরো প্রক্রিয়া মিটে যেতেই অবশ্য ফের ওই রাস্তা গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। তবে রাস্তা বন্ধ করার জেরে এ দিন যানজটে আটকে পড়েছিল বহু গাড়ি।
প্রশাসন সূত্রে খবর, টাটা প্রকল্প এলাকায় শেডের ভিতর মাটির উপর কংক্রিটের চাদর সরিয়ে ফেলতে আপাতত পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিস্ফোরণের পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। কেন না চুঁচুড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত ওই কাজ শেষ করার জন্য সময় বেঁধে দেন। তিন সপ্তাহের মধ্যে ওই কাজ শেষ করতে হবে বলে হুগলির জেলাশাসককে নির্দেশও দিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বিস্ফোরণ ঘটাতে গিয়েও অন্য সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, বিস্ফোরণের এই বিষয়টি প্রচুর সময়সাপেক্ষ। একবার বিস্ফোরণ ঘটাতে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা তার প্রস্তুতিতেই চলে যাচ্ছে। এত বড় এলাকায় কাজ করতে হবে। এই পদ্ধতিতে কাজ হলে মুখ্যমন্ত্রী নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আদৌ কাজ শেষ করা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।’’
তবে সে ক্ষেত্রে বিকল্প কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে তা খোলসা করেননি প্রশাসনের কোনও কর্তা। এদিন সানাপাড়া বাদে প্রকল্প এলাকার অন্য প্রান্তেও কংক্রিটে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তা ভেঙে ফেলার কাজ হয়। এদিন অবশ্য বিস্ফোরণে অভি়জ্ঞ কর্মীদের সংখ্যা বাড়ানো হয়নি। আর তাতেই প্রশ্ন উঠেছে, একদিকে কর্মী কম, অন্যদিকে বাঁধাধরা সময়। সঙ্গে এত বিশাল এলাকায় কাজ। এমন বাস্তব পরিস্থিতিতে আদৌ সরকারি নির্দেশিকা মেনে কাজ শেষ করা যাবে কী?
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে প্রশাসনের কর্তাদের কাছে সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।